গত কয়েকদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ‘রহস্যময়’ যে চীনা বেলুনটি ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেটি আসলে একটি ওয়েদার ডিভাইস। নিজের কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণেই এটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় ঢুকে পড়েছে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় প্রবেশ সম্পর্কিত ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ঘটনার জন্য ও দুঃখও প্রকাশ করছে মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যে বেলুনটি নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটি আসলে একটি ওয়েদার ডিভাইস এবং পুরোপুরি বেসামরিক একটি উপকরণ। মূলত আবহাওয়া পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতেই বেলুনটি আকাশে ওড়ানো হয়েছিল।’
গত কয়েকদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার আকাশে রহস্যময় একটি বেলুনকে উড়তে দেখা যাচ্ছে। প্রথমে এটি আলাস্কার আকাশে দেখা গিয়েছিল, পরে কানাডা এবং সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যের আকাশে উড়তে দেখা গেছে বেলুনটি।
যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মন্টনায় দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর গোলাবারুদ ও ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত রাখা হয়। এ কারণে এই অঙ্গরাজ্যটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্ষেপণাস্ত্রের গুদাম’ নামেও পরিচিত।
বিভিন্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে অনুসারে, বেলুনটির সম্ভাব্য আকার তিনটি বাসের সমান।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগনের দাবি, এই বেলুনটি আসলে চীনের উচ্চক্ষমতার গোয়েন্দা নজরদারি ডিভাইস। পেন্টাগন কর্মকর্তারা প্রথমে বেলুনটি গুলি করে ভূপাতিত করার পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু বেলুনটির ধ্বংসাবশেষ মাটিতে আছড়ে পড়লে নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখা দিতে পারে— আশঙ্কায় তা বাতিল করা হয়।
তবে বুধবার মন্টানার আকাশে বেলুনটি দেখা যাওয়ার পর জরুরি বৈঠকে বসেন পেন্টাগন কর্মকর্তারা। সেই বৈঠকে যুদ্ধ বিমান ব্যবহারের মাধ্যমে বেলুনটি ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই বেলুন সংক্রান্ত জটিলতার জেরে ইতোমধ্যে বেইজিংয়ে নিজের নির্ধারিত সফর বাতিল করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্বয়ংক্রিয় পরিচালনা ব্যবস্থা অতিমাত্রায় সীমিত হওয়ায় জোর বাতাসে বেলুনটি পরিকল্পিত পথ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
সূত্র : বিবিসি