মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের দুই বছর পেরিয়ে গেল। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দেশটির তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চিসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটক করা হয়। সেনাবাহিনীর সদস্যরা নেতাদের বাসায় বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের তুলে নিয়ে যায়। সেদিন দেশটিতে নতুন পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন বসার কথা ছিল।
ওই সামরিক অভ্যুত্থান মিয়ানমারের বেশিরভাগ অংশকে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে, যা এখনো চলছে।
গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা জান্তা সরকারের আরও সদস্যদের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র দেশটির জ্বালানি অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজের (এমওজিই) কর্মকর্তাদের ওপর প্রথমবারের মতো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
মিয়ানমারে মরণদশা: স্যানিটারি প্যাড কেনার টাকা নেই, কমছে মুদ্রার মান
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এদিন দেশটির ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশন, খনি কোম্পানি, জ্বালানি বিষয়ক কর্মকর্তা এবং সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরে জান্তা সরকার তাদের বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য প্রচেষ্টা বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশটির নির্বাচিত নেতা অং সান সু চি কারারুদ্ধ হয়েছেন, জান্তা সরকারের মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
প্রায় তিন হাজার অভ্যুত্থানবিরোধী কর্মী ও বেসামরিক লোককে অভ্যুত্থানের পর থেকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করে রাজনৈতিক বন্দিদের সহায়তা সংস্থা (এএপিপি)।
এএপিপির তথ্য বলছে, ১৭ হাজার ৫৭২ জনকে আটক করেছে জান্তা সরকার। তাদের মধ্যে এখনো আটক আছে ১৩ হাজার ৭৬৩ জন।
চলমান পরিস্থিতিতে দেশটির প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ।
এদিকে, সামরিক জান্তাকে লাগাম দিতে দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয় পশ্চিমা দেশগুলো। দেশটির সেনাবাহিনী, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর আরোপ করা হয় কড়াকড়ি।