বাংলাদেশে ফের পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। যা আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। নির্বাহী আদেশে দাম বৃদ্ধির কথা জানিয়ে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।
নতুন মূল্য অনুযায়ী গ্রাহক পর্যায়ে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের জন্য আগের চেয়ে ইউনিট প্রতি ২০ পয়সা বেড়েছে। গ্রাহক পর্যায়ে এ দাম ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ১৪ পয়সা করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ এর ধারা ৩৪ক-তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে ১২ জানুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করা হলো।
আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে শূন্য থেকে ৫০ ইউনিট ব্যবহারকারী লাইফলাইন গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বেড়ে ৪ টাকা ১৪ পয়সা, শূন্য থেকে ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে ৪ টাকা ৬২ পয়সা, ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের ৬ টাকা ১ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৩১ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট ব্যবহারকারোদের ৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৬২ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের জন্য ৬ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৯৯ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের জন্য ১০ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বেড়ে ১০ টাকা ৯৬ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের ওপরে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল ১২ টাকা ৩ পয়সা থেকে বেড়ে ১২ টাকা ৬৩ পয়সা করা হয়েছে।
এছাড়া পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য ৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ১০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত রোববার (২৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সংশোধন বিল ২০২৩ এর অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় সংসদ। বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছু থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য জনস্বার্থে কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালি কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এসবের উৎপাদন বৃদ্ধি, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।
এর আগে গত ১২ জানুয়ারি দেশে ভোক্তাপর্যায়ে বিদ্যুতের খুচরা দাম ইউনিটপ্রতি ১৯ পয়সা বাড়ানো হয়েছিল। যা ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিমাসে বিদ্যুতের খুচরা দাম নিয়মিত সমন্বয় করা হবে বলেও ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল।
গত ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ওপর গণশুনানির আয়োজন করা হয়। তাতে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব উত্থাপন করে বিদ্যুৎ বিতরণকারী ছয়টি প্রতিষ্ঠান। ওই শুনানিতে বিদ্যুতের দাম ১৫.৪৩ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল বিইআরসির কারিগরি কমিটি।
তবে ওই সুপারিশের ভিত্তিতে নয়, সরকারের নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি প্রথম দফায় বাড়ানোর ঘোষণা এসেছিল।
গত ৩০ নভেম্বর বিইআরসি অধ্যাদেশ ২০২২ সংশোধনের কারণে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পায় সরকার। ওই অধ্যাদেশের আওতায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিলো বিদ্যুৎ বিভাগ।