গ্রীসে গত ৬ বছরের মধ্যে চারটি নির্বাচন হয়ে গেছে, আজকেরটি হচ্ছ পঞ্চম। এমন এক সময় এই ভোট হচ্ছে যখন গ্রীস এক সংকটকাল অতিক্রম করছে।
তাদের সংকটা পন্ন অর্থনীতিকে টেনে তুলতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে – তারই শর্ত হিসেবে একটা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে গ্রীসকে সরকারি ব্যয়সংকোচনের লক্ষ্য পূরণ করতে হচ্ছে।
কিন্তু দাতাদের শর্ত মেনে ওই সহায়তা নেবার পর থেকেই মি সিপ্রাসের জনপ্রিয়তা নাটকীয়ভাবে কমতে শুরু করে। কারণ জানুয়ারি মাসে মি সিপ্রাস যখন নির্বাচনে জেতেন তখন তার এজেন্ডাই ছিল নতুন কোন ব্যয়সংকোচনের শর্ত তারা মানবেন না।
কিন্তু ক্ষমতায় এসে চরম আর্থিক সংকটের মুখে উল্টোটিই তাকে করতে হয়েছে।এই কারণে তার অনেক এমপি বিদ্রোহ করেছেন। তবে তার পরও মনে করা হচ্ছে যে মি সিপ্রাস এখনো নির্বাচনে জিততে পারেন।
মি সিপ্রাস বলছেন, এই সিদ্ধান্ত জনগণই নেবেন। “গ্রীক জনগণ অন্য কাউকে তাদের হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেবে না। তাদের ভবিষ্যৎ তাদের নিজেদের হাতে। তাই তারা স্থিতিশীলতা এবং ভবিষ্যতের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই ভোট দেবেন। ভোট দেবেন এমন এক লড়াকু সরকারের জন্য – যারা ইউরোপে এবং দেশের বাইরের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য লড়বে” বলছিলেন মি. সিপ্রাস।
তবে যেই জিতুন একা সরকার গড়ার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন কিনা ঘোর সন্দেহ আছে। জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে মি সিপ্রাস এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রক্ষণশীল নিউ ডেমোক্রেসি পার্টি র প্রায় সমান-সমান অবস্থানে আছে।
নিউ ডেমোক্রেসির নেতা ভ্যানজেলিস মেইমারকিস বলছেন, গ্রীকরা উন্নত ভবিষ্যতের জন্য ভোট দেবেন এটাই তার আশা। তিনি বলছিলেন “আজ রাজনীতিবিদ নয়, ভোটারদের কথা বলার দিন, আমার মনে হয় তারা চান মিথ্যা, ভড়ং আর দু:খ-কষ্টের অবসান চান। তাদের চাওয়া এমন উপযুক্ত লোকেরা জয়লাভ করবে যারা একটি সব গ্রীকের জন্য উন্নততর ভবিষ্যৎ নিয়ে আসতে পারবেন”।
গ্রীসের জনগণর জন্য একটা বড় উদ্বেগের বিষয় হলো যে নির্বাচনে স্পষ্ট বিজয় কেউ না পেলে তার নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে। এথেন্সের রাস্তায় কয়েকজনে মুখে তারই আভাস ।
একজন বলছেন, “আমরা আশা করছি খারাপের মধ্যেও একটু কম খারাপ কোন রাজনীতবিদ জিতবেন, যাতে গ্যসের ক্ষতিটা একটু কম হয়। আরেকজন বলছেন. প্রধানমন্ত্রী যেই হোন না কেন, আসল ক্ষমতা থাকবে অন্য কারো হাতে।
আরেক জন বলছেন, তিনি চান সিরিজা পার্টিই জিতুক, যাতে তার কাজ করার জন্য চার বছর সময় হাতে পায়”।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে একই রকম উদ্বেগ কাজ করছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যেও। কারণ তাদের দেয়া অর্থসাহায্যের শর্ত হিসেবে যেসব মৌলিক অর্থনৈতিক সংস্কার করার কথা ছিল তা সম্পন্ন করার সময়সীমা শেষ হতে আর বেশি সময় বাকি নেই।
নির্বাচনে কেউ স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সেটা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।
সুত্র: বিবিসি