সাময়িকী.কম
১৮ নভেম্বর ২০১৫ : নিরাপত্তাজনিত কারণে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, আইএমও, ইয়াহু মেসেঞ্জার, ট্যাঙ্গো, লাইনসহ সমধর্মী সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এ ধরনের নির্দেশনা আসার পর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ওই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ করার নির্দেশ দেয় সংশ্লিষ্ঠ ইন্টারনেট গেটওয়ে, ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল ফোন অপারেটরদের। ফলে বেলা সাড়ে ১১টার পরই এ সাইটগুলো বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় ভুল বোঝাবুঝির কারণে প্রায় দেড় ঘণ্টা পুরো ইন্টারনেট সেবাদান কার্যক্রমই বন্ধ রাখে একাধিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। পরে বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নজরে এলে ইন্টারনেট সেবা দ্রুত চালু করা হয়।
এ ব্যাপারে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সমকালকে জানান, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ আপাতত বন্ধ করা হয়েছে। এসব মাধ্যম ব্যবহার করে জঙ্গি কার্যত্রক্রমে উৎসাহ দান, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর উসকানি ছড়ানো, নারীর অবমাননাসহ নানা ধরনের হয়রানি করার সুযোগ থাকে।
এ ব্যাপারে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ সমকালকে জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে জননিরাপত্তার স্বার্থে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবারসহ সমধর্মী সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন কারণে একাধিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও জনস্বার্থে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকবে। তবে টুইটার বন্ধ করা হচ্ছে না বলে স্পষ্টই জানান তিনি।
সংশ্লষ্ঠ সূত্র জানায়, চুক্তি না থাকায় ফেসবুক থেকে আপত্তিকর পোস্ট সরানো যাচ্ছিল না। ফলে ফেসবুক ব্যবহার করে ক্ষতিকর উসকানি, জঙ্গি কার্যক্রমে উৎসাহ, ব্যক্তি হয়রানির অনেক অভিযোগের সমাধান করা যাচ্ছিল না। ফলে রাষ্ট্র এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অনেক অপপ্রচার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মামলার রায়ের সময় এবং হেফাজতের ঢাকায় সমাবেশের পর নির্জলা মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভয়াবহ অপপ্রচার চালাতে ব্যবহার করা হয় ফেসবুক।
শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের চূড়ান্ত রায়কে কেন্দ্র করেও তাদের অনুগতরা এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে গুরুতর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আশঙ্কার কথা বলা হয়।
অন্যদিকে সম্প্রতি অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা ডিভাইসে ভাইবারে কথোপকথন রেকর্ড সম্ভব হলেও অ্যাপলের আইওএস, উইন্ডোজের মতো অপারেটিং সিস্টেম থেকে ভাইবার কথোপকথন রেকর্ড করা সম্ভব হচ্ছিল না। একইভাবে অ্যানড্রয়েড ছাড়া অন্য অপারেটিং সিস্টেমে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ, আইএমও কল পর্যবেক্ষণও সম্ভব হচ্ছিল না। দেখা যায়, সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা মোবাইল ফোনে কথা বলার একপর্যায়ে ভাইবার কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের কথা বলছে। এর পর ওই নিরাপত্তার জন্য হুমকি ওই সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের যোগাযোগ, পরিকল্পনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না।
এর আগে অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে এবং জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যে প্রয়োজনে ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করার কথা বলেন।