দুইটি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

ফয়সাল কবির
ফয়সাল কবির - ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
4 মিনিটে পড়ুন

সাময়িকী.কম

earth 22558 দুইটি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ
বিবিসি’র সৌজন্যে


বড় ধরণের দুইটা ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। ধসে পড়তে পারে বড় বড় ইমারত। ধ্বংসস্তুুপে পরিণত হবে রাজধানী ঢাকাবাংলাদেশের ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থান বিশ্লেষণ করে এমন আশঙ্কার কথাই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরাখবর বিবিসি’র।
 
যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ গবেষণার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা হয়েছে আর্থ অবজারভেটরি। ভূমিকম্পের প্রবণতা নিয়ে ২০০৩ সাল থেকে গবেষণা করছেন অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার। তার গবেষণা মডেল বলছে ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান এবং বার্মা তিনটি গতিশীল প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান।
 
তিনি জানান, বাংলাদেশের দুই দিকের ভূ-গঠনে শক্তিশালী ভূমিকম্পের শক্তি জমা হয়েছে। একটা হচ্ছে উত্তরপূর্ব কোনে সিলেট অঞ্চলে ডাউকি ফল্টে, আরেকটা হচ্ছে আমাদের পূর্বে চিটাগাং ত্রিপুরা বেল্টে পাহাড়ি অঞ্চলে। এ কারণে দুইটা বড় ধরনের ভূমিকম্প বাংলাদেশের দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে। যে কোন সময় এই শক্তি মুক্ত হতে গিয়ে বড় ধরণের ঝাকুনি দিতে পারে। উত্তর প্রান্তে যেটা ডাউকি ফল্ট এখানে সংকোচনের হার হচ্ছে প্রতি একশ বছরে এক মিটার। গত ৫শ থেকে ৬শ বছরে বড় ধরনের ভূমিকম্পের কোনো রেকর্ড নেই। তার অর্থ ৫-৬ মিটার চ্যুতি ঘটানোর মতো শক্তি অর্জন করেছে। এটা যদি আমি রিখটার স্কেলে প্রকাশ করি তাহলে এটা হচ্ছে ৭.৫ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি করতে পারে। এবং এখান থেক ঢাকা শহরের দূরত্ব দেড়শ কিলোমিটার। ঢাকার মধ্যে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো ভূতাত্ত্বিক অবস্থা না থাকলেও সিলেট এবং চট্টগ্রামে শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাজধানী ঢাকা।
 
ভূমিকম্প সহনীয় নিরাপদ অবকাঠামো তৈরি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা করছে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগ। এ বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেছেন, ঢাকা শহরে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় রয়েছে চার লাখের বেশি ভবন। রাজউক এলাকায় যে সংখ্যা ১২ লাখেরও বেশি যার অধিকাংশই ভূমিকম্প সহনীয় নয়। দুর্যোগটা শুধু আর্থকোয়েকের হ্যাজার্ডের দিক থেকে নয়। ঢাকার অবকাঠামো যেমন দুর্বল তেমনি মানুষের জনসচেতনতা কম। সেজন্য যদি একটা বড় মাত্রার ভূমিকম্প হয় আমাদের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অনেক বেশি হবে।
 
ড. আনসারী বলেন, ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের পর নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে প্রয়োজনীয় খোলা জায়গাও নেই ঢাকা শহরে। ভূমিকম্পের দুর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত উন্মুক্ত জায়গা দরকার।
 
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্মুক্ত জায়গা প্রস্তুত করতে না পারলে ভূমিকম্প মোকাবেলায় বিভিন্ন পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে। ধ্বংসস্তুপের মধ্যে উদ্ধারকাজও চালানো যাবে না। উদ্ধার করে মানুষ রাখার জায়গা পাওয়া যাবে না। উদ্ধারকারী যন্ত্রপাতি স্থানান্তর সম্ভব হবে না। বিষয়টা মাথায় রেখে এখনই সরকারি খাস জায়গাগুলো উন্মুক্ত করে ইভাকুয়েশন স্পট হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে।
 
বুয়েটের সঙ্গে যৌথভাবে সরকারের সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি সিডিএমপির এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সাড়ে সাত মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকার ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়বে। যেখানে তৈরি হবে সাত কোটি টন কনক্রিটের স্তুপ। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ এ প্রশ্নে সিডিএমপির সাবেক ন্যাশনাল প্রজেক্ট ডিরেক্টর মুহাম্মদ আবদুল কাইয়ূম বলেন ঝুঁকি কমানোর জন্য জনসচেতনা বাড়ানো দরকার। ভূমিকম্পের ভয়ে আতঙ্কিত না হয়ে এ দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
 
তিনি বলেন, ”এটুক প্রস্তুতি আছে যে, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী বা আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের- কে কোন এলাকাটা দেখবে, কার দায়িত্ব কী, ফায়ার ব্রিগেড কোনটা দেখবে, কী কৌশলে কাজ করবে এটা মোটামুটি সংশ্লিষ্ট সবাই অবহিত আছে। এখন যেটা দরকার জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাতে করে ঝুঁকি কমানো যায়। বিল্ডিং বানানোর সময় যেন আমরা বিল্ডিং কোড মেনে চলি, তাহলে বিল্ডিংটা নিরাপদ করা যাবে।”

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
অনুসরণ করুন:
কর্মজীবী এবং লেখক
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!