চীনে করোনাভাইরাসে দৈনিক মৃত্যু গত ৪ জানুয়ারি সর্বোচ্চ ৪ হাজার জনে পৌঁছায়। শুধু তাই নয়, গত ২২ ডিসেম্বর দেশটিতে এই ভাইরাসে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছায় ৭০ লাখের বেশি জনে। বুধবার চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এই তথ্য জানিয়েছে।
সিডিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, চীনের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার ৮০ শতাংশের বেশি ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী দুই বা তিন মাসের মধ্যে দেশটিতে করোনার প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ২২ ডিসেম্বর করোনা সংক্রমিত মানুষ এবং হাসপাতালগুলোতে বহিরাগত জ্বরের রোগীদের সংখ্যা শীর্ষে পৌঁছেছিল। ওই দিন নতুন করে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ লাখ ছাড়িয়ে যায়। একই সময়ে দেশটির বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে দৈনিক জ্বরে আক্রান্ত বহির্বিভাগের রোগীর সংখ্যা ২৮ লাখে পৌঁছায়।
চলতি মাসের মাঝামাঝিতে চীন জানিয়েছিল, জিরো কোভিড নীতি বাতিলের পর গত এক মাসে চীনে অন্তত ৬০ হাজার মানুষ করোনায় মারা গেছেন। বিতর্কিত কোভিড নীতি বাতিলের পর সেবারই প্রথম চীনের সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা করোনায় প্রাণহানির এই তথ্য প্রকাশ করে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বৈজ্ঞানিক তথ্য ও পর্যালোচনা বিষয়ক সংস্থা এয়ারফিনিটি’র ধারণা, চন্দ্র নববর্ষের ছুটিতে চীনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দৈনিক প্রাণহানি প্রায় ৩৬ হাজার পর্যন্ত উঠতে পারে। সংস্থাটির অনুমান, গত ডিসেম্বরে চীন তার জিরো কোভিড পলিসি বাতিল করার পর থেকে এই রোগে ৬ লাখেরও বেশি লোক মারা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের কর্মকর্তা গুও ইয়ানহং এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, করোনার ঢেউয়ের সর্বোচ্চ সীমা চীন অতিক্রম করেছে। তবে রোববারের চন্দ্র নববর্ষ উপলক্ষে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কয়েক মিলিয়ন মানুষ দেশজুড়ে ভ্রমণ করছে। যা নতুন করে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিন বছরের বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও চীন শুরু থেকেই এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সামাজিক বিধি-নিষেধ আরোপ করে।
যা নিয়ে দেশটিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। করোনা বিধিবিরোধী বিক্ষোভের জেরে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার গত ডিসেম্বরের শুরুর দিকে বিতর্কিত জিরো কোভিড নীতি বাতিলের ঘোষণা দেয়।
আর এরপরই থেকেই দেশটিতে ভাইরাসটির ব্যাপক প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আর এর জেরেই দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের উপচে পড়া ভিড় এবং শেষকৃত্য অনুষ্ঠান স্থলে লাশের দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে।