মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বাহিনীর সদস্যদের সাথে দেশটির গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারী ও জাতিগত বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মাঝে নতুন করে ব্যাপক সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক এই সহিংসতার কারণে দেশটির বিপুলসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। মঙ্গলবার দেশটির স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রায় দুই বছর আগে সামরিক অভ্যুত্থানে মিয়ানমারে গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের পতনের পর থেকে দেশটিতে অস্থিরতা চলছে।
দেশটির জাতিগত বিদ্রোহী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর পাশাপাশি সু চির দলের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (পিডিএফ) সদস্যরা প্রায়ই জান্তা নিয়ন্ত্রিত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।
এর মাঝেই গত কয়েক দিন দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কারেন রাজ্য এবং কিয়োনেডো ও সীমান্তের শহর পায়াথোনজুতে তীব্র সংঘর্ষ দেখা গেছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, কয়েক দিন আগে কিয়োনেডো শহরের কাছের একটি সামরিক কমান্ডে স্থানীয় পিডিএফ সদস্যরা ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
এই হামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য না দিয়ে তিনি বলেন, আশপাশে অবস্থানরত সামরিক বাহিনীর সদস্যরা সতর্কতা হিসাবে পিডিএফের বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে বিক্ষিপ্তভাবে আর্টিলারি গোলাবারুদ নিক্ষেপ করেছে।
প্রায় ৫ হাজার মানুষের শহর কিয়োনেডোর বাসিন্দারা বলেছেন, বিদ্রোহীরা পাল্টা গুলি চালাচ্ছে। স্থানীয়রা সেখানে ‘ইট মারলে পাটকেল’ ছোড়ার মতো আঘাত সহ্য করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, কিয়োনেডোতে সারা রাত গোলাগুলি হয়েছে। আমরা সেখানে অবস্থান করার সাহস করতে পারিনি। এটা অত্যন্ত ভীতিকর।
তিনি বলেন, কিয়োনেডোর হাজার হাজার বাসিন্দা শহর ছেড়ে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে পালিয়ে গেছেন। সোমবার রাতে থাই সীমান্ত থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণের পায়াথোনজুতে সশস্ত্র কারেন বিদ্রোহীরা হামলা চালানোর পর গ্রামবাসীরা পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন তিনি।
সূত্র: এএফপি।