বিক্ষোভ দমনে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহের অভিযোগে ইরানের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বাতিল করেছিলেন। সেসময় ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেই চুক্তিতে থাকতে অনড় ছিল। জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইইউ ওয়াশিংটনকে আবারও সেই চুক্তিতে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালায়। ইরানে পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুর পরে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দমনে কঠোর অবস্থান নেয় দেশটির সরকার। এরপরেই ইইউ নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) ইইউ”র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইরানের অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। ইউক্রেনের ওপর হামলা চালাতে রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ করার জন্যও ইরানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ব্যাপক নিপীড়ন, একাধিক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ফলে অনেক দেশ ও সংস্থা ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ইইউ দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইরানে চলমান সহিংসতারর প্রতিবাদ জানায়। গত বছরে ইরানের ১৪৬ ব্যক্তি ও ১২টি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনে সংস্থাটি। আজ সেই তালিকা আরও দীর্ঘ করা হয়েছে।
ইরানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের প্রশ্নে ঐকমত্য সত্ত্বেও দেশটির কুখ্যাত “রেভুলিউশনরি গার্ডস কর্পস বাহিনী” বা আরজিএস-এর ওপর সার্বিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর প্রশ্নে বিতর্ক চলছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্ট গত বুধবার সেই পদক্ষেপের পক্ষে সমর্থন জানালেও সদস্য রাষ্ট্রগুলো এখনো সেই পথ বেছে নেয়নি।
ইইউ”র সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায় “রেভুলিউশনরি গার্ডস কর্পস বাহিনী”কে অন্তর্গত করলে তার পরিণাম ভালো হবে না বলে হুমকি দিয়েছে ইরান। সে ক্ষেত্রে তেহরান পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
রবিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দোল্লাহিয়ান জানিয়েছেন, ইরানের সংসদ ইউরোপের দেশগুলোর সেনাবাহিনীর কিছু অংশকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায় অন্তর্গত করার লক্ষ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। রেভুলিউশনরি গার্ডস কর্পস বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি ও আমির-আব্দোল্লাহিয়ান এ বিষয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন।
পশ্চিমা বিশ্বের ওপর পাল্টা চাপ সৃষ্টি করতে ইরান কয়েকটি পদক্ষেপের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে। পরমাণু অস্ত্রের প্রসার রোধের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত এনপিটি চুক্তি থেকে সরে আসার আলোচনাকেও উড়িয়ে দিচ্ছে না তেহরান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইরান হরমুজ প্রণালীতে পেট্রোলিয়ামবাহী জাহাজ চলাচলের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
সূ্ত্র: ডয়চে ভেলে