ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ছয় লাখের বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক নজরদারি কোম্পানি “ভয়েজার ল্যাবস”র বিরুদ্ধে মামলা করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জায়ান্ট মেটা।
মেটা জানিয়েছে, ব্যবহারকারীর লাইক, বন্ধু তালিকা, ছবি ও কমেন্টের পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রুপ ও পেইজ থেকেও তথ্য চুরি করেছে কোম্পানিটি। নিজস্ব “সারভেলিয়েন্স সফটওয়্যার” ব্যবহারের মাধ্যমে ছদ্মবেশ ধারণ করে ভয়জার এই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। পাশাপাশি, আর্থিক লাভের প্রত্যাশায় ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, ইউটিউব, লিংকডইন ও টেলিগ্রাম থেকেও কোম্পানিটি ডেটা চুরি করেছে।
মামলার বিচারককে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ভয়জারের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুরোধ করেছে মেটা। মেটার অভিযোগপত্রের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট গিজমোডো।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, “বিবাদীর বেআইনি কার্যক্রমের প্রত্যক্ষ ফলাফল হিসেবে মেটা অপূরণীয় ক্ষতি ভোগ করেছে। এখনো সেটি অব্যাহত রয়েছে। এ জন্য বিদ্যমান আইনে পর্যাপ্ত প্রতিকার ব্যবস্থা নেই। আর এটি চলতেই থাকবে যতক্ষণ না অভিযুক্তের কার্যকলাপ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।”
মেটা দাবি করেছে, ভয়জারের হাতিয়ে নেওয়া ডেটার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অলাভজনক সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়, সংবাদ সংস্থা, স্বাস্থ্য সেবা সংস্থা, সামরিক বাহিনী, দেশটির স্থানীয়, রাজ্য ও ফেডারেল সরকারি সংস্থার বিভিন্ন কর্মীর পাশাপাশি পুরোদস্তর বাবা-মা, অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও দেশটির ইউনিয়ন সদস্যদের বিভিন্ন তথ্য।
এক ব্লগ পোস্টে মেটা উল্লেখ করেছে, তারা ভয়জার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। পাশাপাশি, মেটার নিজস্ব নীতিমালা মেনে চলায় বাধ্য করতে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মেটার প্ল্যাটফর্ম প্রয়োগ ও মামলা পরিচালক জেসিকা রোমেরো বলেছেন, “ভয়জারের মতো কোম্পানিগুলো এমন এক শিল্পের অংশ, যা অপরাধমূলক কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে ব্যবহারকারীকে শিকার বানিয়ে ডেটা চুরির সেবা দেয়। কোনো ধরনের তদারকি বা জবাবদিহিতা ছাড়াই, এই শিল্প গোপনে সেইসব তথ্য সংগ্রহ করে, যা ব্যবহারকারীরা নিজস্ব কমিউনিটি, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করেন। আর তারা এটি করেন নাগরিক অধিকারের পরিপন্থী উপায়ে।”
“ডেটা স্ক্রেপিং” মেটা সবসময় গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। ২০২১ সালে কোম্পানিটি প্রায় ১৮ কোটি ব্যবহারকারীর ডেটা চুরির অভিযোগে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছিল।
প্রসঙ্গত, গতবছরের নভেম্বরে ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর ও অন্যান্য ডেটা ফাঁসের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেওয়ায় মেটাকে ২৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার জরিমানা করেছিল আয়ারল্যান্ডের ডেটা প্রোটেকশন কর্তৃপক্ষ।