ব্রাজিলের কংগ্রেস ভবন, প্রেসিডেন্ট প্যালেস এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালিয়েছে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ডানপন্থী নেতা জেইর বলসোনারোর সমর্থকরা। রবিবার এসব হামলার ঘটনা ঘটে বলে সোমবার (৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বলসোনারো সমর্থকরা কংগ্রেস ভবনের দরজা জানালা এবং ভেতরে আসবাবপত্রও ভাঙচুর করেছে। তারা প্রেসিডেন্ট লুলাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ব্রাজিলের বর্তমান বামপন্থি প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডি সিলভা গত বছরের অক্টোবরের নির্বাচনে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোকে পরাজিত করেছিলেন। রবিবার বলসোনারো সমর্থকদের হামলার পর তিনি রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ফেডারেল নিরাপত্তা হস্তক্ষেপ ঘোষণা করেছেন।
চরম ডানপন্থি এসব সমর্থকরা রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে একের পর এক জায়গায় হামলা চালায়। বিরোধী দলের এই হামলার তীব্র সমালোচনা করে একে “ফ্যাসিস্ট” হামলা বলে আখ্যা দিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা।
লুলা রবিবার বন্যা বিধ্বস্ত আরারাকোয়ারা শহরে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় হামলার খবর পান তিনি। এরপর সেখান থেকেই তিনি ডিক্রি জারি করেন।
দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে সরকারকে বিশেষ ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে। হামলার নিন্দা করে প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, “এই ফ্যাসিস্ট সমর্থকরা এমন কিছু করল, যা এ দেশের ইতিহাসে আগে কখনো হয়নি। যারা এই হামলা চালিয়েছে, তাদের আমরা খুঁজে বের করব এবং আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার করা হবে।”
এদিকে ব্রাজিলে গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনায় বলসোনারো সমর্থকদের হামলা নানা ভিডিও ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এসব ভিডিওতে চরম ডানপন্থি সমর্থকদের কংগ্রেস ভবনের ছাদে উঠে চিৎকার করে স্লোগান দিতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি সামরিক অভ্যুত্থানের দাবিতে সেখানে ব্যানারও লাগানো হয়।
অপর একটি ভিডিওতে কংগ্রেস ভবনের দরজা-জানালা ভাঙতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। এছাড়া আইনসভার সদস্যদের নামে অশালীন মন্তব্য ও স্লোগান দিতেও দেখা যায় তাদের। অন্যদিকে, ভবনের বাইরেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে সাধারণ নির্বাচনে জাইর বলসোনারোকে হারিয়ে জয়ী হন লুইজ ইনাসিও লুলা ডি সিলভা। এরপরই থেকেই বলসোনারোর সমর্থকরা সামরিক অভ্যুত্থানের দাবিতে ব্রাজিলের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু করেন। রবিবারের হামলাও এই বিক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ।