ব্রিটিশ রাজা চার্লস ও প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি ২৫ তালেবানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তার লেখা প্রকাশিত বই ‘স্পেয়ার’-এ এসব কথা তিনি লিখেছেন। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে সেনা হিসেবে হিসেবে কাজ করার সময় ২০১২-১৩ সালে আফগানিস্তানে ফরোয়ার্ড এয়ার কন্ট্রোলার এবং পরে হেলিকপ্টার পাইলট ছিলেন তিনি।
বইয়ে প্রিন্স হ্যারি লিখেছেন, আফগানিস্তানে মোতায়েন থাকা অবস্থায় তিনি ৬টি মিশনে অংশ নেন। প্রতিটি মিশনেই শত্রুপক্ষে নিহতের ঘটনা ঘটেছে। বইয়ে তিনি এই হতাহতকে যৌক্তিক বলে উল্লেখ করেছেন।
প্রিন্স হ্যারি লিখেছেন, এটি গর্ব করার মতো এমন কোনও পরিসংখ্যান নয়, কিন্তু আমাকে লজ্জিতও করেনি। যুদ্ধের উত্তাপ ও বিভ্রান্তির মধ্যে আমি ওই ২৫ জনকে মানুষ বলে মনে করিনি। তারা ছিল দাবার বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া ঘুঁটির মতো, কিছু খারাপ লোককে সরিয়ে দেওয়া- যাতে ভালো লোকদের তারা হত্যা করতে না পারে।
তবে সাবেক ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা রিচার্ড কেম্প বলেছেন, প্রিন্স হ্যারির এমন মন্তব্য সুবিবেচনাপ্রসূত নয়। এর ফলে প্রিন্স হ্যারির নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে এবং কেউ প্রতিশোধ নিতে প্ররোচিত হতে পারে।
কর্নেল কেম্প ২০০৩ সালে আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। তিনি বলেন, প্রিন্স হ্যারি তার হাতে নিহত শত্রুসেনার সংখ্যার কথা বলেছেন, এতে তিনি কোনও সমস্যা দেখছেন না। কিন্তু তিনি যেভাবে তালেবানদের দাবার ঘুঁটি হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তাতে মনে হতে পারে যে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী তাদের ‘মানুষের চেয়ে অধম কিছু বলে’ মনে করে।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা আরও বলেন, বিষয়টি মোটেই এমন নয়। ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এভাবে সেনাদের প্রশিক্ষণ দেয় না।
তবে কনজারভেটিভ এমপি অ্যাডাম হলোওয়ে বলেছেন, কোনও সেনা কতজন শত্রুকে হত্যা করেছেন তা প্রকাশ করা যথাযথ নয়।
বর্তমানে কর্মরত অপর এক সেনা বলেছেন, প্রিন্স হ্যারির মন্তব্য মোটেও ‘সেনাসুলভ নয়।’
প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।
আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকা তালেবান গোষ্ঠীও হ্যারির সমালোচনা করেছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা