ইউক্রেনের শহরগুলোকে লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। বলা হচ্ছে, বৃহস্পতিবারের হামলাটি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সবচেয়ে বড় বোমা হামলার মধ্যে একটি।
রাজধানী কিয়েভে বিস্ফোরণের পর এক শিশুসহ অন্তত তিনজনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো।
বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে খারকিভ, ওডেসা, লভিভ এবং জাইটোমির শহরেও।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলছে, ৬৯টি মিসাইল ছোড়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৫৪টিকে ভূপাতিত করা হয়েছে।
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোদোলিয়াক বলেছিলেন, বেসামরিক অবকাঠামোতে ১২০টিরও বেশি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ ওডেসার আঞ্চলিক নেতা ম্যাকসিম মারচেঙ্কো বলেন, ‘প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে বিমান হামলা চলেছে।’
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী বলছে, বিভিন্ন দিক থেকে আকাশ এবং সমুদ্রভিত্তিক ক্রুজ মিসাইল দিয়ে আক্রমণ করেছে রাশিয়া। তারা বেশ কয়েকটি কামিকাজে ড্রোনও ব্যবহার করেছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওলেকসি হরমোভ একটি অপারেশনাল আপডেটে জানান, সারা দেশে জ্বালানি অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
নগর সামরিক প্রশাসন জানায়, মিসাইলের ধ্বংসাবশেষে কিয়েভের দুটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্লিটসকো বলেন, ‘বিমান প্রতিরক্ষার মাধ্যমে শহরে আঘাত হানতে যাওয়া ১৬টি মিসাইল ধ্বংস করা হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলে মাইকোলাইভের গভর্নর ভিটালি কিম জানান, ৫টি মিসাইল তারা ভূপাতিত করতে পেরেছেন।
অন্যদিকে মেয়র আন্দ্রি সাডোভি বলেছেন, পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী সের্হি মার্চেনকো বলেন, ‘ওডেসা অঞ্চলে ২১টি মিসাইল গুলি করে ভূপাতিত করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। মিসাইলের টুকরো একটি আবাসিক ভবনে আঘাত হানলেও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।’
ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্কের পশ্চিম অঞ্চলের একটি গ্রামে মিসাইলের আঘাতে একটি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সিনিয়র উপদেষ্টা পোডোলিয়াক। বিবিসি স্বাধীনভাবে এই তথ্য যাচাই করতে পারেনি।
পোডোলিয়াক বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করার পাশাপাশি ব্যাপকভাবে বেসামরিক মানুষকে হত্যা জন্য রাশিয়াকে জবাব দিতেই হবে।’
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় ইউক্রেনকে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। এতে ইউক্রেনজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রী হারমান হালুশচেঙ্কো বলেন, ‘সর্বশেষ হামলায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুবিধাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওডেসা এবং কিয়েভ অঞ্চলে পরিস্থিতি কঠিন।’
লভিভের মেয়র বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, তার শহরের ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে ক্লিটসকো বলেছিলেন, কিয়েভের ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎহীন।
ওডেসা এবং ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলেও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।