রাশিয়ার সারাতভ অঞ্চলের এঙ্গেলস বিমান ঘাঁটিতে হামলা ও ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ ভেঙে পড়ার ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহত ওই তিনজনই রাশিয়ার সামরিক কর্মী।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোরে ঘাঁটিতে হামলা চালানোর সময় ইউক্রেনের একটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হলে সেটির ধ্বংসাবশেষ পড়ে তারা প্রাণ হারান।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রুশ বার্তাসংস্থা এই তথ্য সামনে এনেছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। এ নিয়ে চলতি মাসে এঙ্গেলস বিমান ঘাঁটিতে দ্বিতীয় দফায় হামলার ঘটনা ঘটল।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘সারাতভ অঞ্চলে এঙ্গেলস সামরিক বিমানঘাঁটির কাছে যাওয়ার সময় ইউক্রেনীয় মানববিহীন ড্রোনকে গুলি করে নামানো হয়। ড্রোনের ধ্বংসাবশেষের পতনের ফলে এয়ারফিল্ডে থাকা প্রযুক্তি কর্মীদের তিনজন মারাত্মকভাবে আহত হন।’
এঙ্গেলস বিমান ঘাঁটি রাশিয়ার সারাতভ শহরের কাছে অবস্থিত। এই ঘাঁটিটি মস্কো থেকে প্রায় ৭৩০ কিমি (৪৫০ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে এবং ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর একই ঘাঁটিতে হামলার ঘটনা ঘটে। সেসময় রাশিয়া বলেছিল, দু’টি রুশ বিমান ঘাঁটিতে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ইউক্রেনীয় জোড়া হামলা রাশিয়ার সুনামকে ব্যাপকভাবে ধাক্কা দিয়েছে এবং কেন মস্কো ওই হামলা রুখতে ব্যর্থ হয়েছে সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ইউক্রেন অবশ্য কখনোই প্রকাশ্যে রাশিয়ায় হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে দেশটি বলেছে, এই ধরনের ঘটনা রাশিয়ার আক্রমণের ‘কর্মফল’।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, বিমান চলাচলের সরঞ্জামগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে অনানুষ্ঠানিক রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় সোশ্যাল মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, সোমবারের হামলায় রাশিয়ার বেশ কয়েকটি বিমান ধ্বংস হয়েছে।
অবশ্য রয়টার্স স্বাধীনভাবে এসব রিপোর্ট যাচাই করতে সক্ষম হয়নি।
এদিকে সোমবার সারাতভ অঞ্চলের গভর্নর রোমান বুসারগিন বলেন, এই ঘটনায় বেসামরিক অবকাঠামোগত কোনও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘বাসিন্দাদের জন্য একেবারেই কোনও হুমকি নেই… বেসামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।’
উল্লেখ্য, রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের ভলগা নদীর তীরে অবস্থিত এঙ্গেলস বিমানঘাঁটিতে মস্কোর কিছু দূরপাল্লার পারমাণবিক বোমারু বিমান নোঙ্গর করা আছে। এই ঘাঁটিতে পারমাণবিক বোমাবাহী তুপোলেপ-১৬০ ও তুপোলেভ-৯৫ বিমানও রাখা আছে।
এছাড়া এঙ্গেলস বিমানঘাঁটি ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে ৩০০ মাইল দূরে অবস্থিত। যা ইউক্রেনের অস্ত্রাগারের যে কোনও পরিচিত ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালের বাইরে।