বাংলাদেশে টানা তিন দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে প্রায় সাড়ে তিন লাখ পর্যটকের সমাগম হয়েছে। শুধু সৈকতেই নয়, পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, পাথুরে সৈকত ইনানী, হিমছড়ি ও রামু বৌদ্ধমন্দির, মহেশখালী আদিনাথ মন্দিরেও।
শুক্র থেকে রবিবার পর্যন্ত টানা ছুটি পেয়ে অবকাশযাপনের আশায় প্রকৃতির কাছে গেছেন তারা। যার প্রভাব পড়েছে অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থায়। হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলো ফাঁকা নেই।
হোটেলের কক্ষ পেতে লাগেজ নিয়ে এক হোটেল থেকে অন্য হোটেলে ছোটাছুটি করতেও দেখা যায় বেশ কয়েকজন পর্যটককে।
এদিকে, শীতের রাতে হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট লোকে টইটম্বুর। এই শীতে বাইরে রাত কাটানোর শঙ্কায় বহু পর্যটক।
হোটেলে কক্ষ না পেলে সৈকতের বালিয়াড়িতে রাত কাটানোর কথা জানান ঢাকার মিরপুর থেকে সপরিবারে আসা পর্যটক পারভেজ আলম।
তিনি বলেন, “বছরের শেষে ছুটি কাটাতে কক্সবাজার এসেছি। আসার সময় রুম বুকিং দেইনি। এখানে এসে রুম না পেয়ে একটু কষ্ট হচ্ছে।”
শুধু সৈকতেই নয়, পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, পাথুরে সৈকত ইনানী, হিমছড়ি ও রামু বৌদ্ধমন্দির, মহেশখালী আদিনাথ মন্দিরেও।
হোটেল মালিক ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, টানা ছুটিতে শুক্রবার সকাল থেকেই পর্যটকরা কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। সব ধরনের হোটেল-মোটেল রুম বুকিং বন্ধ রয়েছে।
হোটেল দি প্রেসিডেন্ট-এর ম্যানেজার মোহাম্মদ ফয়েজ বলেন, “ডিসেম্বরে আমাদের পর্যটক মৌসুম শুরু হলেও প্রথম দিকে পর্যটকের তেমন সাড়া পাইনি। আজ থেকে যে টানা ছুটি ছিল সেটাতে আমাদের হোটেলে শতভাগ বুকিং হয়েছে। এতে আমরা ক্ষতি পূরণ করতে পারবো।”
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, “কিছুদিন ধরে আমাদের ব্যবসা মন্দা যাচ্ছিল। এতে হতাশায় ভুগছিলেন পর্যটক ব্যবসায়ীরা। টানা তিন দিনের ছুটিতে পুরো কক্সবাজারে সব হোটেল বুকিং হয়েছে। অনেক পর্যটক রুমের জন্য এখনও কল দিচ্ছেন, কিন্তু আমরা তাদের রুম দিতে পারছি না।”
পুলিশ বলছে, সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার বলেন, “টানা তিন দিনের ছুটিতে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম হতে পারে। তাই আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা সবসময় সজাগ আছি।”
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মাসুম বিল্লাহ বলেন, “কক্সবাজারে বর্তমানে সাড়ে তিন লাখ পর্যটক অবস্থান করছেন। তাই এসব পর্যটকের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। একইভাবে সৈকতে দায়িত্বে নিয়োজিত ট্যুরিস্ট পুলিশ তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।”
কক্সবাজার সৈকতে দায়িত্বরত লাইফগার্ড কর্মী রুবেল বলেন, “সৈকতে বিপুল পর্যটক সমাগমের কারণে আমাদের চাপ বেড়েছে। লাইফগার্ড থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন খুব সতর্ক। তাই সৈকতে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে।”