পাকিস্তানের খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি থানার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর জিম্মিদশা তৈরি করা সন্দেহভাজন ৩৩ জঙ্গির সবাই সামরিক অভিযানে নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার প্রদেশের বান্নু শহরের ওই থানায় সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় জঙ্গিদের গুলিতে দুই সৈন্যেরও প্রাণহানি ঘটে।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ‘সব সন্ত্রাসী’; যারা বান্নুর কাউন্টার-টেরোরিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) ভবনে জিম্মিদশা তৈরি করেছিল, তাদের সবাই সামরিক অভিযানে নিহত হয়েছে।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, অভিযানে নিহত ৩৩ জঙ্গির সবাই আগে থেকে গ্রেপ্তার ছিল। বান্নুর কাউন্টার-টেরোরিজম ডিপার্টমেন্ট ভবনে বন্দী ছিল তারা। তাদের মধ্যে একজন সিটিডির এক কর্মীর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে তার কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়েছিল।
দেশটির এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনীর স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের (এসএসজি) একটি ইউনিট সেখানে অভিযান পরিচালনা করেছে। এতে এসএসজির ১০-১৫ জন কমান্ডো আহত হয়েছেন এবং মারা গেছেন দু’জন।
খাজা আসিফ বলেন, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার সময় স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ বিশেষ অভিযান শুরু করেছিল। এই অভিযানে সব জঙ্গি নিহত হয়েছে। দুপুর আড়াইটার মধ্যে পুরো সিটিডি ভবন জঙ্গিমুক্ত করা হয়েছে।
দেশটির রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যানের তীব্র সমালোচনা করেছেন পাক এই মন্ত্রী। একই সঙ্গে এই ঘটনাকে খাইবারপাখতুনখোয়ার পিটিআই দলীয় সরকারের ‘সম্পূর্ণ পতন’ বলে অভিহিত করেছেন।
গত রোববার দেশটির নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সদস্যরা বান্নুর কাউন্টার-টেরোরিজম ডিপার্টমেন্টের ভবনের দখল নেয়। পরে সেখানে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের জিম্মি করে তারা। আফগানিস্তানে নিরাপদে চলে যাওয়ার সুযোগ দাবিতে এই জিম্মিদশা তৈরি করে টিটিপির সদস্যরা।
মঙ্গলবার সকালের দিকে দেশটির টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সামরিক বাহিনীর বিশেষ অভিযানের সময় সিটিডি ভবন থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে। এ সময় ওই ভবনের আশপাশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।