অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার একটি বাড়িতে পুলিশের অভিযান চলাকালে পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছেএই
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলে কুইন্সল্যান্ডের চার পুলিশ কর্মকর্তা প্রথমে ওই বাড়িতে গিয়েছিল। এক নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চালাকালে এই পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বাড়িটি দীর্ঘ সময় ঘিরে রাখার পর পুলিশের গুলিতে তিন সন্দেহভাজন নিহত হয়। তবে পুলিশের ওপর গুলি চালানোর সঠিক কোনো তথ্য জানা যায়নি। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এই ঘটনাকে “অস্ট্রেলিয়ার জন্য হৃদয়বিদারক দিন” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, কনস্টেবল ম্যাথু আর্নল্ড (২৬) ও র্যাচেল ম্যাকক্রো (২৯) ওই বাড়ির কাছাকাছি যাওয়ার পরপরই তাদের গুলি করে মেরে ফেলা হয়। আরেক কর্মকর্তা গুলির আঘাতে আহত হন এবং চতুর্থ জন ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
৫৮ বছর বয়সী এক প্রতিবেশী “ঘটনা কী” দেখতে এসে সন্দেহভাজনদের গুলিতে নিহত হন। তার নাম প্রকাশ করা হয়নি।
কুইন্সল্যান্ডের পুলিশ কমিশনার ক্যাটরিনা ক্যারোল এই ঘটনাকে “অকল্পনীয় শোচনীয় ঘটনা” বলে বর্ণনা করেছেন। ঘটনাটিকে তিনি তাদের বাহিনীর অনেক বছর পর “সবচেয়ে বড় প্রাণহানির ঘটনা” বলেও চিহ্নিত করেন।
মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, “ওই কর্মকর্তারা কোনো সুযোগই পাননি। বাকি দুজনের জীবন নিয়ে ফিরে আসাই একটি অলৌকিক ঘটনা।”
ক্যারোল জানান, আর্নল্ড ও ম্যাকক্রো তুলনামূলকভাবে পুলিশে নতুন হলেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও সাহসের কারণে সুনাম অর্জন করেছিলেন।
তিনি জানান, স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের ১৬ জনের একটি দল সাহসের সঙ্গে এই জুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়, কারণ তারা জীবিত আছেন এমনটিই ধারণা ছিল তাদের; এরপর পুলিশের বিশেষ বাহিনী এসে অভিযানের দায়িত্বভার তুলে নেয়।
সন্দেহভাজন দুই পুরুষ ও এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার আগে চার ঘন্টা ধরে অবরোধ অব্যাহত ছিল।
ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে জানিয়ে ক্যারোল বলেন, এ ঘটনায় বহু অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ কর্মকর্তারা “গেরিলা হামলার” শিকার হয়েছেন। কুইন্সল্যান্ড পুলিশ ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করে বলেছেন, তাদের “ঠাণ্ডা মাথায়” হত্যা করা হয়েছে। অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যম এবিসিকে তিনি বলেন, “তাদের ওপর টানা গুলিবর্ষণ করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।”
স্থানীয় এমপি ডেভিড লিটলপ্রাউড জানিয়েছেন, এ হামলার ঘটনায় তাদের এলাকাবাসী স্তব্ধ হয়ে গেছে। ছোট এই গ্রামীণ শহরে এ ধরনের ঘটনা “অস্বাভাবিক”।
ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা মৃত্যুর ঘটনাগুলো তদন্ত করে দেখবেন এবং পুলিশ যেভাবে সাড়া দিয়েছে তা বাহিনীটির নৈতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আদর্শ অনুশীলনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা যাচাই করে দেখা হবে বলে জানা গেছে।