মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে গত দুই মাস ধরে হিজাব-বিরোধী আন্দোলন চলছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে হিজাব ইস্যু নিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মাহসা আমিনী নামে এক তরুণী মারা যাওয়ার পর দেশটিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি হিসাব মতেই এতে ২০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। হিজাব নিয়ে এখনো ইরানের বিভিন্ন প্রান্তে উত্তেজনা চলছে।
আর এরমধ্যে ইরানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কঠোর হিজাব পরিধানের কয়েক যুগ পুরোনো বিধানটি পর্যালোচনা করে দেখছেন তারা। এ জন্য একটি দল গঠন করা হয়েছে।
ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মোন্তাজারি শনিবার (৩ ডিসেম্বর) এ ব্যাপারে ইরানের বার্তাসংস্থা ইসনা নিউজকে বলেছেন, ‘সংসদ এবং বিচার বিভাগ উভয়ই এ ইস্যু নিয়ে কাজ করছে, আইনে কোনো পরিবর্তন আনতে হবে কিনা তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’
তবে আইনে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হলেও কি ধরনের পরিবর্তন আনবেন তারা এটি খোলাসা করেননি তিনি। ইরানের বিচার বিভাগ এবং সংসদ দুটিরই নিয়ন্ত্রণ রয়েছে রক্ষণশীল মুসলিম নেতাদের হাতে।
কট্টরপন্থি রাষ্ট্র ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল আরও জানিয়েছেন, গত বুধবার এ নিয়ে সংসদের সাংস্কৃতিক কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন দলটির সদস্যরা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে আলোচনার ফলাফল দেখতে পাব।’
এছাড়া উগ্র রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শনিবার কঠোর হিজাব পরিধান আইন নিয়ে নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাইসি বলেছেন, ‘ইরান প্রজাতন্ত্র এবং ইসলামিক সংগঠনগুলো সংবিধানের আলোকে চলে। তবে নমনীয় হয়ে সংবিধানে থাকা বিধান কার্যকর করা যেতে পারে।’
এদিকে ১৯৮৩ সালের এপ্রিলে ইরানে সব নারীদের জন্য মাথার স্কার্ফ দেওয়া বা হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়। এর চার বছর আগে এক বিপ্লবের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রপন্থি রাজতন্ত্রের পতন ঘটান ইসলামপন্থিরা।
ইরানে হিজাব ইস্যুটি রাজনৈতিকভাবে বেশ স্পর্শকাতর। কারণ রক্ষণশীলরা কঠোর হিজাব বিধানের পক্ষে। আর নতুন প্রজন্ম এর বিরুদ্ধে।
সূত্র: এএফপি