টানা নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ এই আগ্রাসনে সামরিক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির মুখে পড়েছে ইউক্রেন। এছাড়া রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়ানোয় এই ক্ষতি আরও বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে রাশিযার বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে নিষ্ঠুরতার’ অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি মস্কো ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করছে বলেও অভিযোগ তুলেছে দেশটি। রোববার (৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে রাশিয়াকে ‘ইচ্ছাকৃত নিষ্ঠুরতার’ জন্য অভিযুক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। স্থানীয় সময় শনিবার তিনি দাবি করেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার সিমি ভ্যালিতে রিগান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোরামে প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত নিষ্ঠুরতা চালানোর পাশাপাশি রাশিয়া বেসামরিক মানুষ এবং বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করে গোলাবর্ষণ করে চলেছে।’
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হামলায় ইউক্রেনের শিশুরা মারা গেছে, স্কুলগুলো ভেঙ্গে গেছে এবং হাসপাতালগুলো ভেঙে পড়েছে।’
এর আগে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘বর্বরতার’ নতুন স্তরে নিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ একজন কূটনীতিক। তিনি বলেছেন, পুতিন ইউক্রেনের সাথে শান্তি আলোচনার বিষয়ে আন্তরিক নন।
সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো ধ্বংসে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। এই পরিস্থিতিতে শনিবার কিয়েভ সফর করেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড। সেখানে রুশ আত্রমণ মোকাবিলায় সমর্থন জানাতে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন তিনি।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘(যুদ্ধ বন্ধে) কূটনীতি অবশ্যই সবার অগ্রাধিকার কিন্তু সেটি করতে গেলে আপনার একজন আগ্রহী অংশীদার থাকতে হবে। এবং এটি খুব স্পষ্ট, জ্বালানি অবকাঠামোতে আক্রমণ হোক আর ক্রেমলিনের বাগ্মীতা; যেটিই হোক না কেন, পুতিন এর জন্য এখনও আন্তরিক বা প্রস্তুত নন।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, রুশ নেতা যুদ্ধ শেষ করতে আগ্রহী হলে তিনি পুতিনের সাথে কথা বলতে প্রস্তুত। কিন্তু বাইডেনের এই পরিকল্পনা বেশ দ্রুতই গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে যখন ক্রেমলিন জানায়, পশ্চিমাদের অবশ্যই মস্কোর চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের রুশ অধিগ্রহণকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
রাশিয়ার এই প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে নুল্যান্ড বলেন, ‘বাইডেনের পরিকল্পনা সম্পর্কে মস্কোর এই জবাব এটাই দেখাচ্ছে যে, তারা (রাশিয়া) যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে ততটা আগ্রহী নয়’।