প্রেম ভাসান
নিষ্কলঙ্ক জৌলসে প্লাবিত হয় আবেগ,
উপেক্ষিত ভাবনারা আজ ছন্নছাড়া হোক,
রাসায়নিক জৈব তাই ভরে যাক হঠাৎ চুম্বনের দাগ,
জোনাকিরা এক হয়ে নেমে আসুক এই পৃথিবীর বুকে,
লজ্জাবস্ত্রের প্রতিটা কোন সরিয়ে আমার ভালোবাসার রঙ ছোপ পড়ুক তোমার শরীরে;
বিষাদের মরুদ্যান গড়তে চাই না আর-
এক পশলা বৃষ্টিতে ভিজে তুমি আমি মিলে ধুয়ে ফেলি সব নিয়মের রং,
ভোরের নমনীয় সান্দ্রতায় ভেসে যাক ভালোবাসার সব শর্ত.
দুরন্ত প্রেমের শান্ত মন্ত্রমুগ্ধতায় ভরে থাকুক তোমার আমার জীবন যাপন।
আবেক্ষণ
সকালের সুপ্রভাতের আশায় বুক বেঁধে ছিল কতগুলো কল্পনা.
সময় ভগ্নাংশের সাথে যোজনীয় দূরত্ব পার করে
জমাট গাণিতিক ভাষা তৈরি করতে চেয়েছিল তারা.
ব্যবহারের অভিব্যক্তি নেতিবাচক আবেগের টানে ,
মহাকাশে সূত্র কে হঠাৎ মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
ভীষণভাবে চোখে পড়ে যায়.
গতিশীলতার ধর্মে বিভাজন হয় সব কিছুরই;
জোনাকির আলোক বিন্দু তার ব্যতিক্রম নয়,
বসন্তের এলোমেলো বিবসনা হাওয়া
তাই আজও আমার প্রিয় হয়ে থেকে যায়।
প্রেম হারা
তুমি এসেছিলে তরঙ্গায়িত দীর্ঘ ঢেউ এর মত-
ইউটোপিয়ান প্রেমের সমস্ত নিয়মকে গচ্ছিত রেখে
আমি মিশেছিলাম তোমার সাথে।
প্রতিটা কথার শেষে আমি দেখেছিলাম গভীর ক্ষয়,
চুম্বনের অভিব্যক্তি বিস্বাদ বাসি র মত ফ্যাকাশে
পুরনো হয়ে যাওয়া বস্তু মাত্র. ইউক্যালেপটাসটাও বুঝেছিল
আদুরে বিকালে আসলে নীরবতার মানে,
সেইবার চন্দ্র স্নানে গিয়ে বুঝেছিলাম অন্ধকারই তোমার পছন্দ,
অস্থির কোলাহলে বিপন্ন তুমি
একটু একটু করে কখন সরে গেছিলে বুঝতে পারিনি,
শব্দের ক্ষয় নিয়ে বিষন্ন যাপনকে আঁকড়ে ধরি আমি,
শূন্যতায় তোমার অস্তিত্ব
বায়বীয় আকারে পরিণত হয় আমার অস্তিত্বের মাঝে।
একটি ভালবাসার গল্প
ভালোবাসার গভীর ক্ষত এ নিষিদ্ধ বিসর্গ ,
সহজে স্পর্শ ছোঁয়ায় লুকিয়ে anxiety phobia.
টিউলিপ ফুলের বাগানে বসন্ত বাতাস অমলিন,
কবির ভাবনায় বুনোট ছন্নছাড়া শব্দরাও
আবেগ হাতরায়,
কবে যেন বলেছিলে নীল পাখির কথা!
মন জুড়ে শুধু নিষিদ্ধ আরব্য রজনী.
আমি বুঝেছিলাম আকর্ষণ-বিকর্ষণের সূত্রকে
ক্ষমতায়নে কোন ঋতু স্পর্শ করে না,
অথচ অনুভূতি অসুখের মতো জড়িয়ে থাকে মনে,
অঙ্গীকারে তো প্রেম দাসত্ব খোঁজে-
হৃদয় থেকে হৃদয়ের পরিবর্তনশীল পথে
তুমি আমি খুঁজে বেড়াই সবুজ চরাচর.
সমুদ্রের অসমান ঢেউয়ের বুদবুদের মতো
ঈশ্বরীয় বিশ্বাসে ঝাঁপিয়ে পড়ি অনুভূতির বিস্তীর্ণ প্রতিটা কোনে,
শেষ পর্যন্ত তোমার আমার ভালবাসার গল্প-
আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে জীবন্ত অস্তিত্ব হয়ে ঠিক ধরা পড়ে ই যায়।
মুক্তিক্ষণ
পড়ন্ত বিকালে রক্ত চুনিয়ে পড়ছে নিভন্ত সূর্য থেকে,
কত আনকথা জমে ছিল সময়ের সাথে.
তবু জীবন পরিচ্ছেদে কখন একটা পাতা সাদা হয়ে থেকে গেছে;
গাণিতিক নিয়মে তুমি ফেরোনি আর-
উপন্যাসের স্বর্গীয় মুক্তির আশায়-
আজও বসে থাকি আমি।
বাঁচা
তোমার মতে সবথেকে শক্তিশালী হলো সূর্য,
কেননা প্রচন্ড রশ্মি তীব্রতায়
প্রাণের উৎসর ভূমিকায় পৃথিবী তার মুখাপেক্ষী,
কিন্তু সূর্যেরও রক্তক্ষরণ হয়
বিকালের পড়ন্ত বেলায়-
সমস্ত আকাশকে রক্তাক্ত লাভায় রাঙিয়ে আত্মসমর্পণের ক্লান্তিতে
প্রতিদিনই সূর্য হেরে যায়.
তোমার মতে সব থেকে সুন্দর চাঁদ,
ভেবে দেখো চাঁদ আসলে ভীষণ ধূসর,
অবিন্যস্ত মেঘের অগোছালো আচরণে তার অস্তিত্ব প্রতিনিয়ত টলমলে,
তাই আলো-আঁধারি রাতের নাটকে সে প্রায়ই লুকিয়ে হারিয়ে যায়.
তোমার মতে আকাশ সবচেয়ে বড়,
চোখ তুলে দেখ উঁচু উঁচু বিল্ডিং আর কংক্রিট আকাশ ধরা দেয় নিজেকে কিংবা মাঠের এক প্রান্তে সে গিয়ে মিশে যায়.
উন্মত্ত কালো ধোঁয়ায় নিজেকে লুকিয়ে ফেলতে যাওয়া এই আকাশ তখন
মনে হয় যেন এক স্থবির আদর্শের মতো.
তাই নিজের অস্তিত্বের কথা ভাবো,
নিজের মতো করে হৃদয়ের উৎসাহিত সুখ দিয়ে তুমি শুধুই নিজে বাঁচো।