চলমান বিক্ষোভে সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘের তদন্তের আহ্বানকে নাকচ করে দিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে জাতিসংঘকে এ ঘটনায় কোনো তদন্ত করতে দেয়া হবে না। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বৃহস্পতিবার ভোটের পর ইরানের আন্দোলন ইস্যুতে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
সঠিকভাবে হিজাব না করার অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু হয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর। সেদিন থেকেই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে গোটা ইরানে। এই আন্দোলন এখনো চলছে।
ইরান এই বিক্ষোভের জন্য বিদেশি শত্রুদের দায়ী করছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, এই বিক্ষোভে পশ্চিমাদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ তেহরানের কাছে আছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেন, ‘জাতিসংঘের অধিকার পরিষদ কর্তৃক গঠিত রাজনৈতিক কমিটির সঙ্গে ইরানের কোনো সহযোগিতা থাকবে না।
‘আমেরিকা ও তার কয়েকটি মিত্র দেশের এই বিক্ষোভে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। যার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।’
এর আগে ইরান সরকারকে আন্দোলনকারীদের ওপর অযৌক্তিক নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানান জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত রাজতন্ত্রকে উৎখাত করার মাধ্যমে ১৯৭৯ সালের ইরানে ইসলামি বিপ্লব ঘটে। এ বিপ্লবের চার বছর পর ইরানে হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়।
মানবাধিকারবিষয়ক বার্তা সংস্থা এইচআরএনএ জানায়, ইরানে চলমান বিক্ষোভে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৫০ আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৬৩ শিশু রয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর ৬০ জন সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন নিহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত আটক আছেন ১৮ হাজার ১৭৩ জন।
ইরান সরকার আন্দোলনে হতাহতের কোনো তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। তবে দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাগেরি কানি বলেছেন, বিক্ষোভে ৫০ পুলিশ নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।