কাতারের দোহার স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ এইচ গ্রুপের ঘানা বনাম পর্তুগালের ম্যাচটি শুরু হয় বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় মাঠে বল গড়ানোর পর থেকেই যেনো একপেশে লড়াই চলছিল পর্তুগাল এবং ঘানার মধ্যে। যেনো গোলের কোনো তীব্র আকাঙ্খা শুধু পর্তুগিজদেরই আছে। অন্যদিকে, ঘানা যেন মাঠে নেমেছে শুধু প্রতিপক্ষের গোলের প্রচেষ্টা নিষ্ফল করতে।
ফলে পর্তুগাল যেখানে আক্রমণের পর আক্রমণ শানিয়ে গিয়ে গোলের কাছাকাছি পৌঁছেছে, সেখানে পর্তুগিজদের ডি-বক্সে ঘানা কোনো বলই স্পর্শ করতে পারেনি। ম্যাচের ৩১ মিনিটে রোনালদো একবার গোল করতে পারলেও ফাউলের কারণে সেটি বাতিল হয়।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে লড়াই যেন হলো বাঘে মহিষে। গতিশীল খেলা শুরুর পরই কি-না একে অপরের জালে বল ঢুকলো পাঁচ বার! শুরুটা রোনালদোর পেনাল্টি থেকে। আর এই গোলটা করেই রোনালদো স্পর্শ করলেন এক রেকর্ড। পরপর পাঁচ আসরে গোল তার।
তবে পাল্টা আঘাত দিতে সময় নেয়নি ঘানাও। আট মিনিট পরেই আন্দ্রে আইয়ুর গোলে সমতা ফেরায় আফ্রিকান দলটি। তবে খেলা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পর্তুগাল সময় নিলো মাত্র তিন মিনিট। কিন্তু গতিময় খেলায় ৭৮ ও ৮০ মিনিটে পরপর দুই গোল করে দলকে এগিয়ে নেন পর্তুগালের জোয়াও ফেলিক্স ও রাফেল লিয়াও।
ততক্ষণ পর্যন্ত পর্তুগাল অনায়াস জয় পাবে বলেই মনে হচ্ছিলো। কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টে যায় ৮৯ মিনিটে ওসমান বুকারির গোলে ঘানা ব্যবধান কমানোর পর। এরপরে বারবার আক্রমণ শানিয়েছে দুই দলই। শেষ দিকে এসে যেনো কিছুটা ধার বেড়েছিল ঘানারই। শেষ মিনিটে তাই পর্তুগাল গোলরক্ষকের ভুলে আবারও ম্যাচে ঘানার সমতা ফেরানোর উপক্রমও হয়েছিল।
কয়েক সেকেন্ড পরেই বড় বাঁশি। খেলা শেষ হবে। ৩-২ গোলে এগিয়ে রোনালদোর দল। বল পর্তুগালের ডি বক্সে। গোলবারের সামনে নেই গোলকিপার। ডাগআউটের বাইরে সিআর সেভেনের কপালে কয়েক সেকেন্ডের দুশ্চিন্তা! দ্বিতীয়ার্ধের ৪৫ মিনিটে পাঁচ গোল দুই দলের। এগিয়ে থেকেও কি-না ম্যাচ ড্রয়ের মুখে পড়ে যাচ্ছিলো!
না, অঘটন ঘটেনি। শেষ পর্যন্ত রোনালদোকেও হতাশ হতে হয়নি। শেষমেষ জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন ফার্নান্দো সান্তোসের শিষ্যরা। তবে সহজ থেকে পরিণত হওয়া কষ্টের জয় তাই পর্তুগিজ শিবিরে তীব্র উচ্ছ্বাস তৈরি করেনি। রোনালদোর রেকর্ডের দিনের হাসিটা তাই অতটাও উচ্ছ্বাস ছড়াল না। বরং জিততে পেরে হাঁপ ছেড়ে বাঁচার অঙ্গভঙ্গি সবার ভেতর। এক কথায় মানে মানে ইজ্জত বাঁচার স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন খেলোয়াড়রা।