বিশ্বকাপ শিরোপার জন্য প্রায় ৬০ বছরের খরা কাটাতে কাতারে পা দিয়েছে ইংল্যান্ড। আর নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা জানান দিল নিজেদের শক্তিমত্তার।
আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে ইরানকে ৬-২ গোলে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। গ্রুপ বি-র প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের পক্ষে জোড়া গোল করেন বুকায়ো সাকা। একটি করে গোল আসে জুড বেলিংহ্যাম, রাহিম স্টার্লিং, মার্কাস র্যাশফোর্ড ও জ্যাক গ্রিলিশের কাছ থেকে।
খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে শুরুতেই ইরানের পিছু নেয় দুর্ভাগ্য। দশম মিনিটে নিজ দলের ডিফেন্ডার মাজিদ হোসেইনির সঙ্গে সংঘর্ষে নাকে ব্যথা পান ইরানের গোলকিপার আলিরেজা বাইরানভান্দ।
মিনিট পাঁচেক তাকে শুশ্রূষা দেয়ার পরও সেরে ওঠেননি তিনি। ফলে, বদলি হিসেবে নামানো হয় হোসেইন হোসেইনিকে।
অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর খেলায় মনোযোগী হয় দুই দল। ইরানের বিপক্ষে ইংল্যান্ড দ্রুত গতির আক্রমণ সাজাতে সমর্থ হয়। প্রথম সুযোগ পান ইংল্যান্ডের ম্যাগুয়াইর।
৩২ মিনিটে কিরেন ট্রিপিয়েরের কর্নারে ম্যাগুয়াইর হেড করার পরও সেটি বারে লেগে ফিরে আসে।
বেশি সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়নি ইংল্যান্ডকে। দুই মিনিট পর বাঁ প্রান্ত থেকে করা লুক শর ক্রসে মাথা ছুঁয়ে থ্রি লায়নদের এগিয়ে দেন জুড বেলিংহ্যাম।
এক গোল পাওয়ার পরই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। নিজেদের বক্সে সেট পিসগুলো রক্ষা করতে হিমশিম খাচ্ছিল ইরান। সেটিকে কাজে লাগায় ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয় গোলটিও আসে এমন একটি পরিস্থিতি থেকে। কর্নার কিক থেকে বক্সে থাকা ম্যাগুয়াইরকে খুঁজে নেন ট্রিপিয়ার।
ম্যাগুয়াইর এবারে নিজে চেষ্টা করেননি, বল বাড়িয়ে দেন বুকায়ো সাকার দিকে। সাকা চমৎকার ভলিতে দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
বাইরানভান্দের চোটের কারণে প্রথমার্ধ শেষে প্রায় ১২ মিনিট ইনজুরি টাইম যোগ করেন রেফারি।
সেই সুযোগে আরেকটি গোল আদায় করে নেয় ইংল্যান্ড। হ্যারি কেইনের অ্যাসিস্ট থেকে সহজে লক্ষ্যভেদ করেন পোস্টের কাছে দাঁড়ানো রাহিম স্টার্লিং।
প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।
বড় জয়ের পথে থাকলেও বিরতির পর আক্রমণের ধার কমায়নি ইংলিশরা। একের পর এক আক্রমণে তারা ব্যস্ত রাখে ইরানের রক্ষণভাগকে।
৬২ মিনিটে চতুর্থ গোলের দেখা পায় ইংল্যান্ড। স্টার্লিংয়ের বাড়ানো বল ডান দিকে পেয়ে কাট করে বক্সে ঢুকে পড়েন সাকা। তার নেয়া শট ইরানের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে জালে জড়ায়।
মিনিট তিনেক পর ইরান ইঙ্গিত দেয় ম্যাচে ফেরার। আলি গোলিজাদেহর বাড়ানো ক্রস ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডার ম্যাগুয়াইরকে ফাঁকি দিয়ে রিসিভ করেন মেহদি তারেমি। বল নিয়ন্ত্রণে এনে ইংলিশ গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ডকে পরাস্ত করেন তিনি।
ইংল্যান্ড গোল হজম করার পরও আক্রমণে ভাটা দেয়নি। ৭১ মিনিটে হ্যারি কেইনের অ্যাসিস্টে দলের পঞ্চম গোল করেন বদলি হিসেবে নামা মার্কাস র্যাশফোর্ড। আর শেষ মুহূর্তে ইরানের বিপক্ষে গোল উৎসব পূর্ণ করেন জ্যাক গ্রিলিশ।
ইনজুরি টাইমে গোলের সুযোগ পায় ইরান। কিন্তু ওয়ান অন ওয়ান অবস্থা থেকে সারদার আজমুনের শট ঠেকিয়ে দেন ইংল্যান্ডের গোলকিপার পিকফোর্ড।
আর একেবারে শেষ মুহূর্তে তারেমিকে পিকফোর্ড নিজেদের বক্সে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ইরান। স্পট থেকে ব্যবধান কমান তারেমি।
বাকি সময়ে আর গোল না হলে ৬-২ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড।
এটি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়। গত বিশ্বকাপে তারা পানামাকে ৬-১ গোলে হারিয়েছিল।