টানা ৯ মাস ধরে ইউক্রেনে কথিত সামরিক অভিযান চলছে রাশিয়ার। সামরিক অভিযানের নামে হত্যা আর ধ্বংসযজ্ঞ চলছে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে। তবে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অব্যাহত পাল্টা প্রতিরোধে বিপর্যস্ত রুশ বাহিনী। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যমে নিউজউইকে জানা গেছে, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে এক সপ্তাহেরও কম সময়ে প্রায় ২ হাজার ৬০০ যোদ্ধাকে হারিয়েছে মস্কো। লড়াইয়ে রাশিয়ার ব্যাকফুটে যাওয়ার বিষয়টি আরও স্পষ্ট।
রাশিয়া-ইউেক্রেনীয় যোদ্ধাদের পাল্টাপাল্টি আক্রমণ চলছেই। পশ্চিমাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দখলদার রুশ বাহিনীর ওপর হামলা দিনকে দিন বাড়িয়ে তুলছে কিয়েভের সেনারা। ফলে রুশ সেনাদের প্রকৃত বিপর্যয়ের চিত্রটা আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রকাশিত পরিসংখ্যানে জানা গেছে, শুধু শুক্রবারই প্রায় ৩৫০ রুশ সেনাকে হত্যা করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। চলতি সপ্তাহে এটিই সবচেয়ে কম হতাহত।
গত সোমবার থেকে আনুমানিক দুই হাজার ৬০০ রুশ সেনাকে হত্যা করেছে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা। যার মধ্যে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ ৭১০ জন ছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর রুশ সেনা নিহতের সংখ্যা ৮৩ হাজার ছাড়িয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
শুধু সেনা নিহত বা আহতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, অনেক ট্যাংক, সামরিক যান এবং ড্রোন ধ্বংস করে যাচ্ছে ইউক্রেন। যেসব ড্রোনে গত মাস থেকে রাজধানী কিয়েভ এবং ইউক্রেনের অন্যান্য শহরগুলোতে ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে মস্কো। ইউক্রেনসহ পশ্চিমারা দাবি করছে, এসব ড্রোন ইরানের তৈরি কামিকাজে বা শাহেদ ১৩৬।
এক সপ্তাহে ৭৩টি ক্রুইজ মিসাইল ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন। রাশিয়ার এমন ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে নিউজউইক ক্রেমলিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে কোনও প্রতিক্রিয়া পায়নি।
এই মাসের শুরুতে নিউ ইয়র্কের ইকোনমিক ক্লাবে জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ চেয়ারম্যান মার্ক মিলি বলেন, যুদ্ধে রাশিয়ার হতাহতের সংখ্যা আনুমানিক ১ লাখ হতে পারে।
বেসামরিক নাগরিকের হতাতের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনের আনুমানিক ৪০ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। সেইসঙ্গে কয়েক বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অবশ্য ভিন্ন কথা বলছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়। তাদের মতে, এই হতাহতের সংখ্যা ৭ হাজার হতে পারে।