ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান দুই দলের সামনেই ছিল দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের সুযোগ। তবে ক্রিকেটীয় লড়াই ছাপিয়ে ফাইনালের আগে চোখ রাঙাচ্ছিল বৃষ্টির সম্ভাবনা। তবে ওই আশংকাকে ফাঁকি দিয়ে ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালের পুনর্মঞ্চায়ন শুরু হয় ভালোভাবেই। সেই লড়াইয়ে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ২০১০ সালের পর আবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হলো ইংলিশরা।
ইংল্যান্ড-পাকিস্তান ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই ৩০ বছর আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুদলের শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ের কথা ফিরে ফিরে আসছিল। ১৯৯২ সালের সেই ফাইনালের ভেন্যুও ছিল মেলবোর্ন। সেই ফাইনালে টস ভাগ্য পাকিস্তানের পক্ষে থাকলেও রবিবার (১৩ নভেম্বর) টসে জিতলো ইংল্যান্ডই। তবে মিরাকল অব ৯২ এর সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্য রাখতেই কি-না পাকিস্তানকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠান ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার।
যদিও জস বাটলার সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হিসেবে বলেছেন আবহাওয়ার কথাই। তবে কারণ যাই হোক, ইংলিশ অধিনায়কের প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্তটা দারুণ কাজে দিয়েছে। শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের চাপে ইংলিশ বোলাররা। পাকিস্তানেরর ইনিংসের প্রথম তিন ওভারে কোনো বাউন্ডারি ছিল না। প্রথম ৬ ওভারের পাওয়ারপ্লেতেও মাত্র ৩৯ রান তুলে সুবিধা করতে পারেননি পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। মাঝে পঞ্চম ওভারে ফিরে যান ওপেনার ও উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান (১৫)।
দলীয় ৪৫ রানে মোহাম্মদ হারিস ফিরে গেলে চাপে পড়ে পাকিস্তান। এরপর শান মাসুদ আর বাবর আজম মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৩৯ রান। এরপর ১ রানের ব্যবধানে পরপর দুই ওভারে ৩২ রান করা বাবর এবং কোনো রান না করা ইফতিখার আহমেদ সাজঘরে ফিরে যান।
তবুও শান মাসুদ (৩৮) এবং শাদাব খানের (২০) হাত ধরে ভালো সংগ্রহের স্বপ্ন দেখছিল পাকিস্তান। দুজনের ৩৬ রানের জুটির ওপর ভর করে ১৭ ওভারে ১২১ রান তোলে পাকিস্তান। কিন্তু পাঁচ বলের ব্যবধানে দুজন ফিরে গেলে দলের রানের গতি আর বাড়েনি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের ইতিহাসে এটি যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর।
ইংলিশ বোলারদের মধ্যে স্যাম কুরান মাত্র ১২ রান খরচায় ৩টি উইকেট নেন। সেই সঙ্গে আদিল রশিদ এবং ক্রিস জর্ডান ২টি করে উইকেট নেন।
১৩৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডেরও। প্রথম ওভারের শেষ বলে ইংলিশ ওপেনার অ্যালেক্স হেলসকে বোল্ড করেন পাকিস্তানি পেসার শাহিন আফ্রিদি। চতুর্থ ওভারে দলীয় ৩২ রানে হারিস রউফে শিকার হন ফিলিপ সল্ট। এর মধ্যে বিপদজনক হয়ে ওঠার আভাস দিচ্ছিলেন ইংলিশ উইকেটরক্ষক জস বাটলার। তবে নিজের পরের ওভারেই তিন চার ও এক ছয়ে ১৭ বলে ২৬ রান করা ইংল্যান্ড অধিনায়ককে সাজঘরে ফেরান রউফ।
বেন স্টোকস আর হ্যারি ব্রুক মিলে ইংল্যান্ডকে ভালোমতোই জয়ের দিকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। তবে দলীয় ৮৫ রানে ব্রুককে (২০) ফিরিয়ে তাতে বাদ সাধেন শাদাব খান। তবে পঞ্চম উইকেটে দুই অলরাউন্ডার স্টোকস এবং মঈন আলীর ৪৮ রানের জুটিতে বাকি পথটা বেশ অনায়াসেই পার হয় ইংল্যান্ড। দলীয় ১৩২ রানে মঈন আলী ফিরে গেলেও লিয়াম লিভিংস্টোনকে সঙ্গে নিয়ে এক ওভার হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলেন স্টোকস। পাঁচ বাউন্ডারি এবং এক ছক্কায় ৪৯ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার।