জেগে থাকো
উৎসর্গ: প্রয়াত কবি নাসিম এ আলম
মৃত্যুর খবর এসেছে
তোমাকে নিয়ে শোকের ছায়া ঘরে ঘরে।
তোমার কবিতা ভরায় মন
তাইতো, প্রশংসায় পঞ্চমুখ সুশীল কুমার।
নাসিম এ আলম,
তোমার মৃত্যু হয় না
জেগে থাকো তোমার সৃষ্টিতে।
ফিরে এসো
উৎসর্গ: রাজা রামমোহন রায়
তুমি চিরসত্য, তোমার
সৃষ্টির জন্য।
তোমার প্রাসঙ্গিকতা এতটুকু কমেনি
এই সময় কালেও।
অমিল কবিতা কিংবা ভোরের শিশিরে
জরাজীর্ণ ভবন,
লক্ষ্মণ রেখা ডিঙিয়ে যাক বা না যাক
সীতার দুঃখের কোনও সীমা নেই।
রাজা, তোমার সৃষ্টি কিংবা
তোমার সেই স্পর্ধাটাকে তুলে ধরতে পারিনি।
নব ভারতের অগ্রদূত,
নতমস্তকে কৃতজ্ঞ তোমার কাছে, তুমি
আর একবার এসো ফিরে।
সিত্রাং
নদীর তীর বিদ্ধ করে এখন
গ্রামগঞ্জের বুক চিরে,
কোনওকিছু না মেনে দুরন্ত গতিতে
ছুটে চলেছে সিত্রাং।
পিরের থান, পুজোর মণ্ডপ ভাঙে
তার প্রতাপে
বাড়ি,ঘর,ঘরের চাল ভেসে যাচ্ছে নদীতে
জবুথবু মানুষ কিংবা
নদীর বাঁকে দাঁড়িয়ে থাকা বুড়োবট গাছটা
এক নিমেষে তলিয়ে গেল।
হাওয়া অফিস থেকে টান টান কথা হেঁকেছিল
দিনে সতেরোবার।
তোমাকে আর একবার মনে করিয়ে দিই
চারদিকে যখন শ্মশানের শান্তি
তখন ভাঙ্গন দেখতে
তারা ইচ্ছেডাঙ্গা থেকে নেমে এসে দর্শনার্থীর মত ভিড় করে।
বিকাশ
অজস্র তোমার ফেসবুক-বন্ধু।
সজাগ দৃষ্টি, আবার মনোযোগী তারা
শুধু তোমারই জন্য, কিন্তু—
পাশের চির-চেনা কানা গলি, গলির রং রয়ে গেল
বাহুমূলের নিম্নদেশে।অথচ
মুঠোফোনের গলি, তস্য গলিতে গিয়ে
অভীপ্সিত চাঁদ-বুড়িকে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার সবই দিচ্ছে।
এমন ফেসবুকে থাকে কী—
জীবন্ত বিকাশ
খেলা
নিয়োগ দুর্নীতির ফিরিস্তি প্রকাশ হওয়ায়
বিধ্বস্ত তোমার কথিত শ্বেত আঁচল।
সাদা খাতায় খেলা করে
কেউ, কেউ ফুলে উঠেছে। আর
প্রচেতা হন্যে হয়ে খুঁজে
জীবন ধারণের কিনারা
দয়া করে তার দারুন দুর্দশার কথা শুনুন একবার!
এতকিছুর পরও পুণ্যার্থী পুজো দিতে ভিড় করে
কালীঘাট মন্দিরে।
তোমার হাতের স্পট ছাপে এ’খেলা যে,
জীবন মরণের খেলা হয়ে উঠল?
আত্মগ্লানি
নামহীন নই, গোত্রহীনও নই
তবুও নিষিদ্ধ পল্লিতে দিন-যাপনের গ্লানি।
ঠিকানা ছিল—
চাইবাসা ,সরাইকেলা ,গুমলা কিংবা
কোনও এক গাঁ-ঘর।
এখন এখানে আমি খুব অসুস্থ
চোখের নিচে কালি
সারারাত ঘুমোতে দেয় না
রাতজাগা গিলটি-করা জোনাকির দৌরাত্ম্য।
দিনের বেলা এ-পথে এলে
জোনাকির গায়ে পাক দেয় ,
কেননা গা-ভরতি স্পর্শদোষে
আমি তখন একঘরে থাকি। কিন্তু
রাত নামতেই নেশাগ্রস্থ জোনাকি এসে
খেলা করে এখানে
প্রসাদ খায়,
কোন জাদু বলে!
এই গোপন কথা থাক, নীরবে নিরন্তর।