বাংলাদেশে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের জন্য বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, আলীকদম ও থানচিতে পর্যটকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এমন আশঙ্কায় এসব এলাকায় স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এই নিষেধাজ্ঞা আরও চার দিন বাড়িয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন।
এর আগে ১৭ অক্টোবর রাত থেকে রুমা ও রোয়াংছড়িতে এবং ২৩ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত থানচি ও আলীকদমে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পরে এই চার উপজেলায় ৩১ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিন নিষেধাজ্ঞার সময় বাড়ানো হয়েছিল।
শুক্রবারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোয়াংছড়ি, রুমা, ও থানচিতে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহের জন্য বান্দরবান সেনা সদস্যদের টহল কার্যক্রম পরিচালনা এবং গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখা হবে। এই লক্ষ্যে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, আলীকদম এবং থানচি উপজেলায় স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার সময় আজ থেকে আগামী মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বেঞ্চ সহকারী সুমন পাল বলেন, “রোয়াংছড়ি, রুমা, আলীকদম ও থানচিতে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করার পর এখন আলীকদম ও থানচি উপজেলায় নতুন করে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে পরবর্তী কোনো নির্দেশনা পাওয়া না গেলে আলীকদম ও থানচি উপজেলাতে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।”
গত ২০ অক্টোবর জেলার রোয়াংছড়ি ও রাঙামাটি বিলাইছড়ির সাইজামপাড়ার দুর্গম এলাকায় যৌথ বাহিনীর ১০ দিনের অভিযানে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সাতজন ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর তিনজনকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সরাঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব। এই অভিযান চলমান থাকায় নিরাপত্তার কথা ভেবে পর্যটক যাতায়তে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন।
প্রতিবছর শীত মৌসুমে জেলায় হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটলেও এবার নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় পর্যটক না আসার কারণে জেলার দুই শতাধিক হোটেল-মোটেল ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো লোকসানের মুখে পড়েছে।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা প্রত্যাশা করছেন দ্রুত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে। বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতি অর্থসম্পাদক রাজীব বড়ুয়া ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যত পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে বান্দরবান। আশা করছি দ্রুত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।”