অস্ট্রেলিয়ায় চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রানে জয়লাভ করেছে বাংলাদেশ। ১৫১ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান করে জিম্বাবুয়ে।
এর ফলে তিন ম্যাচে দুই জয়ে সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখলো বাংলাদেশ। এই ম্যাচের শেষ বলে অন্যরকম রোমাঞ্চ উপভোগ করলো ক্রিকেট ভক্তরা।
শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ৫ রান। স্ট্রাইকে ব্লেসিং মুজারাবানি। ব্যাট চালিয়েছিলেন, তবে লাগাতে পারেননি। স্টাম্পিং করেন নুরুল হাসান সোহান। ৪ রানে জয়ের আনন্দে বাংলাদেশ মাঠ ছাড়ার আগে করমর্দন করছিলেন দুই দলের ক্রিকেটাররা।
এ সময় দেখা যায় উইকেটের সামনে বল ধরেছিলেন নুরুল হাসান। স্টাম্পিংয়ের বদলে টেলিভিশন আম্পায়ার দিয়েছেন নো বল। আবার মাঠে নামতে হয় দু দলকে।
নো বলের বদৌলতে একটি বাড়তি রানের পাশাপাশি শেষ বলে ফ্রি হিট পায় জিম্বাবুয়ে। আর শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন থাকে ৪ রানের।
তবে ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকায় শেষ বলটি ডট দেন মোসাদ্দেক।দ্বিতীয় দফা জয়ের উদ্যাপন করে বাংলাদেশ। ৩ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাকিবের দল।
রবিবার (৩০ অক্টোবর) ব্রিসবেনে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ।নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান করে বাংলাদেশ।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭১ রান করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটিই বাংলাদেশের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। ৫৫ বলে সাত চার ও এক ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান শান্ত।
দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এসেছে আফিফ হোসেনের ব্যাট থেকে। ১৯ বলে এক চার ও এক ছক্কায় এই রান করেন আফিফ। ২০ বলে এক চারে ২৩ রানে আসে সাকিবের ব্যাট থেকে। ১২ বলে তিন চারে ১৪ রান করেন লিটন। সোহান ও ইয়াসির রাব্বি এক রান করে যোগ করেন দলের স্কোর বোর্ডে। শূন্য রানে ফেরেন সৌম্য।
জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে সফল বোলার রিচার্ড এনগারাভা। এই পেসার ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। ব্লেসিং মুজারাবানি ২ ওভারে ১৩ রান খরচায় পেয়েছেন ২ উইকেট। ৪ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে এক উইকেট নিয়েছেন সিকান্দার রাজ। ২ ওভারে ১০ রানে এক উইকেট নিয়েছেন শন উইলিয়ামস।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৪৭ রান করতে পারে জিম্বাবুয়ে।
তাসকিন আহমেদ প্রথম ওভারেই তুলে নেন উইকেট। বিস্ময়কর হলেও সত্য চলতি বিশ্বকাপে টানা তিন ম্যাচে নিজের প্রথম ওভারে উইকেট শিকার করলেন তাসকিন। এই পেসার রোববার ফেরান জিম্বাবুয়ের ওয়েসলি মাধেভেরে। তৃতীয় ওভারে এসে ইনফর্ম এই পেসার ফেরান ক্রেইগ আরভিনকে। তার ওভারের চার নম্বরে বলে আরভিন ওয়াইড লাইনের কাছ দিয়ে যাওয়া বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট চালান, ব্যস বল ব্যাট ছুঁইয়ে জমা পড়ে নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে।
তারপর মুস্তাফিজ ম্যাজিক। নেদারল্যান্ডস ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে উইকেট পাননি মুস্তাফিজ। তবে বল হাতে মন্দ ছিলেন না। এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজেকে ফের ফিরে পেলেন কাটার মাস্টার। এক ওভারেই তুলেন ২ উইকেট। মিল্টন শুম্বাকে দিয়ে শুরু। এবার সিকান্দার রাজাকে পথ দেখিয়ে স্বস্তি এনে দেন গ্যালারিতে।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ দারুণ সফল। ৬ ওভার শেষে ৩৬ রান দিয়ে দল তুলে নেয় জিম্বাবুয়ের ৪ উইকেট। এরপর সে চাপটা জিম্বাবুয়ের ওপর শেষ পর্যন্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। তারপরই শেষ ওভারের নাটক। তবে শেষ হাসি বাংলাদেশেরই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫০/৭ (শান্ত ৭১, আফিফ ২৯, সাকিব ২৩, লিটন ১৪, মোসাদ্দেক ৭; মুজারাবানি ২/১৩, এনগারাভা ২/২৪)।
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৪৭/৮ (উইলিয়ামস ৬৪, বার্ল ২৭*, চাকাভা ১৫, শুম্বা ৮, আরভিন ৮; তাসকিন ৩/১৯, মোস্তাফিজ ২/১৫, মোসাদ্দেক ২/৩৪)।
ফল: বাংলাদেশ ৩ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: তাসকিন আহমেদ।