বাগেরহাটের রামপালে শনিবার রাতে কয়েকটি বাড়িতে একদল দুর্বৃত্তরা রাতে হামলা চালিয়ে বাড়ি ঘর ভাংচুর ও মারধর ও লুটপাট অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে স্থানীয়রা জানান।
হামলার ঘটনায় ৫ নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রামপাল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার রাতে উপজেলার কাদিরখোলা ও শ্রীকলস গ্রামে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর খবর পেয়ে র্যাব খুলনা-৬ এর একদল সদস্য ও রামপাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে হামলার শিকার ওই সব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৭ এপ্রিল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার পর শ্রীকলস এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা বিল্লাল বেপারী (৫৫) এর নেতৃত্বে জনপ্রিয় বিএনপি নেতা আক্তার চেয়ারম্যান হত্যার মূল আসামী ও একাধিক মামলার আসামী বাকি বিল্লাহ বেপারী (৪৫), বাচ্চু সরদার (৩৮), শাহাজান বেপারি (৩৬), মামুন ঢালী (৩২), ফারুক বেপারী (৪০), কালা মান্নু (৩৮), নজরুর সরদার (৪০)সহ শতাধিক ব্যক্তি দেশী অস্ত্র নিয়ে ভাগা এলাকার শহীদ সরদার, কাদিরখোলার সিদ্দিক সরদার, শ্রীকলস এলাকার আমিনুল ইসলাম, শামীম হাসান, আলাল উদ্দিন ও মাজেদুল ইসলামের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়ে বাড়ি ঘর ভাংচুর করে নারী-পুরুষদের উপর হামলা চালায়। এ সময় বাঁধা দিলে হামলাকারীরা ফাতেমা বেগম (২৬), খাদিজ বেগম (২২), নাজমা বেগম (৪৫), ফাতেমা বেগম (৬৩), ফজিলা বেগম (৫০), আলাল শেখ(৩৪), বুলবুল আলম সরদার (৩৩), সিদ্দিক সরদার (৫০), আল মামুন সরদার (২২) আহত হন। এরমধ্যে গুরুতর আহত ফাতেমা বেগম, খাদিজা বেগম, ফজিলা বেগম, ফাতেমা বেগম, আলম শেখকে উদ্ধার করে ওই রাতে রামপাল উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক তিনজন নারী বলেন, হামলাকারীদের দুইজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। অন্যদের হাতে দা-লাঠি, চাইনিজ কুড়াল ও লোহার রড ছিল। বাড়িতে হামলা চালানের আগে তারা এক রাইন্ড গুলি ছুঁড়ে ত্রাস সৃষ্টি হয় বলে তারা জানান।
উল্লেখ্য উজলকুড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খাজা মঈন উদ্দিন আকতার হত্যা মামলার তিন নম্বর আসামী বাকি বিল্লাহ বেপারীর বিরুদ্ধে অন্তত ১৪/১৫ টি মামলা রয়েছে। সে জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপোরে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামসুদ্দিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার পর রাতেই খুলনা থেকে র্যাবের সদস্য ও রামপাল থানা থেকে ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। থানায় মামলা হয়েছে। আসামী আটকের চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনার পর ওই এলাকা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ফের হামলা হতে পারে এমন আশংকা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
এ দিকে উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের কুমলাই গাববুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তালুকদার রেজাউল করিম তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৭ এপ্রিল শনিবার ভোরে কুমলাই গ্রামের হাওলাদার নাজির হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে লোহার রোড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন। ফজরের নামাজ পড়ে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি বর্তমানে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় রামপাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।