অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের এখন ঐক্য ও স্থিতিশীলতা দরকার বলে মনে করছেন হবু প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এ লক্ষ্যে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
দেশটির ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির (টরি) নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় সময় সোমবার সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই রাজনৈতিক নেতা।
যুক্তরাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতাই প্রধানমন্ত্রী হন; সে হিসেবে এখন শুধু সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা বাকি।
নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর দুই মিনিটেরও কম সময়ের বক্তব্যে দেশ ও দলের মধ্যে ঐক্যের ডাক দেন সুনাক। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য একটি মহান দেশ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমরা একটি গভীর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।’
সুনাক বলেন, ‘আমাদের এখন স্থিতিশীলতা এবং ঐক্য দরকার। আমি আমাদের দল এবং দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেব।’
কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব প্রশ্নে ভোট থেকে শেষ প্রতিদ্বন্দ্বী পেনি মর্ডান্ট সরে দাঁড়ানোয় বিনা ভোটেই টরিদের নেতা হন সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এর আগে এই দৌড় থেকে নাম প্রত্যাহার করেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ২০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন লিজ ট্রাস। প্রধানমন্ত্রী পদে শুধু ৪৫ দিন দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
সুনাকের জন্ম ১৯৮০ সালের ১২ মে পূর্ব ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনে। কেনিয়ান বাবা এবং তানজেনিয়ান মায়ের কাছে বেড়ে ওঠেন তিনি। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় সুনাক। তার দাদা-দাদি ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০-এর দশকে সন্তানদের নিয়ে পূর্ব আফ্রিকা থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান তারা।
চলতি গ্রীষ্মের শুরুতে বরিস জনসনকে নেতার পদ থেকে প্রতিস্থাপনের দৌড়ে ছিলেন ঋষি সুনাক। রক্ষণশীল এমপিদের সর্বাধিক সমর্থন জিতে লিজ ট্রাসের সঙ্গে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি।
দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রচারে তিনি সতর্ক করেছিলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বীর (ট্রাসের) কর পরিকল্পনা অর্থনীতির ক্ষতি করবে। তবে তার বার্তা পার্টির সদস্যদের কাছে অতটা গ্রহণযোগ্য হয়নি। তিনি ২১ হাজার ভোটে হেরে যান।
সুনাক একবারই রিচমন্ডের নর্থ ইয়র্কশায়ার নির্বাচনি এলাকা থেকে ২০১৫ সালে এমপি হয়েছিলেন। ওয়েস্টমিনস্টারের বাইরে খুব কম মানুষই তাকে সমর্থন করে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজকোষের চ্যান্সেলর হয়েছিলেন তিনি।
লকডাউন চলাকালীন অর্থনীতিকে সচল রাখতে বিপুল অর্থ ব্যয় করে করোনা মহামারির সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল সুনাককে। স্ত্রীর করবিষয়ক বিতর্কের কারণে খ্যাতি ক্ষুণ্ন হয় সুনাকের। এর কিছুদিন পর লকডাউন নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানা গুনতে হয়েছিল তাকে।