বাংলাদেশে একবার ব্যবহারযোগ্য (ওয়ানটাইম) প্লাস্টিকের শীর্ষ দূষণকারী হিসেবে তালিকার শীর্ষে রয়েছে বহুজাতিক পানীয় কোম্পানি কোকা-কোলা। বছরে তাদের বর্জ্যের পরিমাণ মোট বর্জ্যের প্রায় ২০.৭৮%।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) তাদের জরিপের ভিত্তিতে এ তথ্য জানায়। এতে জানানো হয়, পঞ্চমবারের মতো শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে কোকা-কোলা কোম্পানি।
এসডো জানায়, তারা এই বছরের ব্র্যান্ড অডিট পরিচালনা করেছে ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম শহরে। ২৫০ জনেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে যথাক্রমে ২৫ আগস্ট, ২০ সেপ্টেম্বর এবং ২৪ সেপ্টেম্বরে অডিটগুলো পরিচালনা করা হয়৷ অডিটগুলোর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেছে আজ।
তারা জানায়, বাকি বর্জ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে পাওয়া গেছে পেপসিকো (১৫.৬০%), প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ (৯. ৬৩%), ইউনিলিভার (৬.৫%), পারটেক্স গ্রুপ (৫.৮%), আকিজ গ্রুপ (৩.৬৩%), নেসলে (৫.১%), বোম্বে সুইটস লিমিটেড (৩.০৭%) ইত্যাদি। উল্লিখিত তিনটি শহরের চারটি স্থানে প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে অডিটগুলো পরিচালনা করা হয়।
স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দেশের তিনটি শহরে প্রায় ৩০ হাজার ৮৬২ পিস প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। সংগৃহীত বর্জ্যের মোট পরিমাণ ছিল ১৬৬ দশমিক ১৯ কেজি প্রায়। সংগ্রহের পরে বর্জ্যগুলো বাছাই করা হয় এবং সেগুলোর ব্র্যান্ডগুলোকে রেকর্ড করা হয়। অডিট রেকর্ডে প্রধানত ৩৮টি স্থানীয় এবং ১৪টি আন্তর্জাতিক কোম্পানি চিহ্নিত করা হয়েছে যাদের মাঝে প্রায় ২২০টি ব্র্যান্ড রয়েছে। অডিটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড এবং তাদের সংশ্লিষ্ট নির্মাতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে যাদের পণ্য গুলো সর্বাধিক পরিমাণে পাওয়া গেছে। ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে- কোকা-কোলা, পেপসি, মাম, প্রাণ, জা এবং জি, আলুজ, ম্যাটাডোর অরবিট, বসুন্ধরা টিস্যু (প্যাকেট), ফ্রেশ টিস্যু (প্যাকেট), লেক্সাস, সেন্টার ফ্রুট, ফ্রুট ফান, পালস, রুচি, সানসিল্ক, কিনলে ইত্যাদি। এই তালিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কোকা-কোলা কোম্পানি, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, পেপসিকো, পারটেক্স গ্রুপ, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড ও ইউনিলিভার।
জরিপের ফলপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসডোর চেয়ারপারসন সৈয়দ মারঘুব মোর্শেদ বলেন, “একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক শুধু পরিবেশের জন্যই নয়, মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। করপোরেশনগুলোকে তাদের দ্বারা সৃষ্ট প্লাস্টিক দূষণের দায় নিতেই হবে। এই কোম্পানিগুলোর প্লাস্টিক পণ্যে ও স্যাশেতে আমাদের বাজার সয়লাব যা আমাদের আরও হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
এসডোর সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার প্রোফ. ড. আবুল হাসেম বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যেই প্লাস্টিক সংকটের বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে এবং আসন্ন প্লাস্টিক চুক্তির মাধ্যমে আমরা এই ধরনের বিপজ্জনক দূষণের সমাধান খুঁজে পাবো বলে আশা করছি।”
অন্যদের মধ্যে এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা, মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বক্তব্য রাখেন।
(সূত্র ঢাকা ট্রিবিউন)