ভারতবর্ষকে সামরিক শক্তিতে বলিয়ান করতে বিজ্ঞান শিক্ষাকে আরো বেশি সুদূরপ্রসারী করতে মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করে তুলতে সর্বোপরি ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ককে নিবিড় করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরো প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ গড়ার কারিগর এবং আদর্শ নাগরিক রূপে গড়ে তুলতে আব্দুল কালামের অবদান অপরিসীম। আমৃত্যু এই অকৃতদার দেশকে ভালোবেসে দেশের কল্যাণে উন্নয়নে ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। আজ ১৫ অক্টোবর। ১৯৩১ সালের আজকের দিনেই জন্মগ্রহণ করেন ভারতের মহান বিজ্ঞানী এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। আরও বড় কথা যে ভূমিকাতেই তাঁকে দেখা যাক না কেন, তিনি ছিলেন বিতর্কের ঊর্ধ্বে। শিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন এক অনুপ্রেরণামূলক চরিত্র। শিক্ষকতাকেই সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দিয়েছিলেন এবং শিক্ষক হিসেবেই নিজেকে সব থেকে বেশি গর্ব অনুভব করতেন। ছাত্র সমাজের প্রতি তাঁর অগাধ আস্থা ছিল। কালাম মনে করতেন, ছাত্র সমাজের প্রগাঢ় জ্ঞান দেশ গঠনে সাহায্য করে। ছাত্র সমাজকে তিনি এতটাই মূল্য দিতেন যে, রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে বহুবার ছাত্রদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছেন। সম্মান করতেন শিক্ষকদের।তিনি বিশ্বাস করতেন সুষ্ঠু সমাজ গঠনের মূল কারিগর শিক্ষক সম্প্রদায়। এমনকী নবীন প্রজন্মের সঙ্গে কথোপকথনের ভিত্তিতে তিনি একাধিক বই লিখেছিলেন। তাঁর মধ্যে পাঠকমহলে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে, ইগনাইটেড মাইন্ডস। তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ উইংস অফ ফায়ার বা অগ্নিপক্ষ এ তিনি স্পষ্টভাবে দেখিয়েছেন জীবনের সফলতা পরিপূর্ণতা উঠানামা হতাশা নিরাশা দগ্ধতা যন্ত্রণাকে কাটিয়ে উঠে কিভাবে মানুষ মনুষ্যত্বের বোধ জাগরনের হয়ে উঠবে প্রকৃত মানুষ। তিনিমনে করতেন, বিশ্বে ভাল ভবিষ্যত গড়তে পারে ছাত্ররাই। ছাত্রদের অবদানে তৈরি হয় সুঠাম, সুষ্ঠু সমাজ। ছাত্রদের প্রতি তার ভালবাসাকে সম্মান জানাতে ২০১০ সাল থেকে জাতিসংঘ কালামের জন্মদিন ১৫ অক্টোবরকে বিশ্ব ছাত্র দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।কালাম মনে করতেন, ছাত্র সমাজের প্রগাঢ় জ্ঞান দেশ গঠনে সাহায্য করে। ছাত্র সমাজকে তিনি এতটাই মূল্য দিতেন যে, রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন বহুবার ছাত্রদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছেন। সম্মান করতেন শিক্ষকদের। তিনি বিশ্বাস করতেন সুষ্ঠু সমাজ গঠনের মূল কারিগর শিক্ষক সম্প্রদায় ভারতকে ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন দেশে পরিণত করায় এপিজে এ পি জে আব্দুল কালাম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর নিরবচ্ছিন্ন মহাকাশ গবেষণার ফসল হিসাবেই তাঁকে ‘মিসাইলম্যান অব ইন্ডিয়া’ বলে অভিহিত করা হয়। ছাত্রদের কাছে প্রিয় এই বিজ্ঞানীর জন্মদিনকে রাষ্ট্রসঙ্ঘ বিশ্ব ছাত্র/শিক্ষার্থী দিবস হিসাবে বেছে নিয়েছে।অনন্য প্রতিভার অধিকারী ছিলেন ডঃ এ পি জে আব্দুল কালাম, কখনও তিনি বিজ্ঞানী, কখনও লেখক, কখনও শিক্ষক আবার তিনিই ভারতের রাষ্ট্রপতিপদে আসীন হয়েছিলেন।বিজ্ঞানের গবেষণায় নিরলস পরিশ্রমে ভারতকে বিশ্ব-মাঝে এক উচ্চতার আসনে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। জীবদ্দশায় তার ৮৪ বছরের দীর্ঘ ও সফল কর্মজীবনে অর্জিত অভিজ্ঞতা ও দর্শন থেকে তিনি অনুভব করেছেন তরুণ প্রজন্ম অর্থাৎ ছাত্র ছাত্রীরাই আসল শক্তি। কেবল তারাই গড়তে পারে আগামী দিনের জন্য সুন্দর ভবিষ্যত শত প্রতিকূলতার মাঝে। ছাত্রদরদী শিক্ষক তথা ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম ২০১৫ সালে ২৭ই জুলাই, শিলং এ ইন্ডিয়ান ইন্টিটিউট অফ্ ম্যানেজমেন্ট নামক প্রতিষ্ঠানে “বসবাসযোগ্য পৃথিবী” বিষয়ে বক্তব্য রাখার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মারা যান। তার কিছু বাণী আমাদের এখনো অনুপ্রাণিত করে। তিনি বলেছেন জীবন ও সময় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। জীবন শেখায় সময়কে ভালোভাবে ব্যবহার করতে, আর সময় শেখায় জীবনের মূল্য দিতে। এমন বরেণ্য প্রথিতযশা বিজ্ঞান সাধক দেশহিতৈষী মানবতার মূর্ত প্রতীক আব্দুল কালামের জন্ম দিবস বিশ্ব ছাত্র দিবস হিসেবে পালনের মধ্য দিয়ে আপামর ছাত্র মানসে সৃষ্টি হবে আরও বেশি যুক্তিবাদ জ্ঞানার্জনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা শিক্ষার্থী সুলভ আচার-আচরণ বিজ্ঞান চেতনা উদারতা সর্বোপরি মনুষ্যত্বের উন্মেষ। বিশ্ব ছাত্র দিবসে ছাত্রছাত্রীর মানসিক বিকাশ পড়ুয়া মনোভাবের অদম্য নিষ্ঠায় আরো বেশি মজবুত হয়ে উঠুক ছাত্র শিক্ষক সম্পর্কের নিরবচ্ছিন্ন সংবেদনশীলতা। দেশ গঠনের কান্ডারী রূপকার আগামী প্রজন্ম ছাত্র জীবনের পরিপূর্ণতার মধ্য দিয়ে হয়ে উঠুক প্রকৃত শিক্ষা লাভে আদর্শ মানুষ। পরিশেষে বিশ্ব ছাত্র দিবস পালন তখনই প্রাসঙ্গিক যথার্থ হয়ে উঠবে যখন ছাত্র দরদী বিজ্ঞানী শিক্ষক আব্দুল কালামের আদর্শ জীবন দর্শন আমাদের প্রত্যেকের কাছেই পাথেয় হয়ে উঠবে।
বিশ্ব ছাত্র দিবস পালন ও বিজ্ঞানী আব্দুল কালামের জন্ম দিবস স্মরণ
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
ইংরেজিতে স্নাতক। পেশা শিক্ষকতা। ছাত্রাবস্থা থেকেই লেখালেখির প্রতি আকর্ষণ। বিশেষত কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ বিভিন্ন ফিচার লিখতে অভ্যস্ত। প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় উদার আকাশ পত্রিকা। এরপর শব্দসাঁকো, জিলিপি, শারদীয়া আগন্তুক, আলেখ্য, আখর কথা, পত্রিকায় কবিতা প্রকাশিত। আনন্দবাজার পত্রিকা, প্রতিদিন, উত্তরের সারাদিন, পুবের কলম, দিনদর্পন, সাত সকাল প্রভৃতি পত্রিকায় প্রবন্ধ চিঠিপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এখনো ভালো লাগে কলমটাকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিনিয়ত সৃষ্টিশীলতায় ভেসে গিয়ে ভাব জগতে বিচরণ করে কিছু না কিছু লিখতে। লেখালেখিটা অনেকটা জীবনের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। ক্রমশই অনুভূত লেখনিই আমার জীবনের অবশ্যিক অভিব্যক্তি।
একটি মন্তব্য করুন
একটি মন্তব্য করুন