মহাকাশ থেকে যেকোনো কিছু পৃথিবীর দিকে ছুড়ে দেওয়া হলে সেটিকে প্রতিহত করা সম্ভব বলে জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনস্ট্রেশন (নাসা)।
নাসা গত ২৬ সেপ্টেম্বর ডিমরফোস নামের একটি গ্রহাণুকে ধাক্কা দিতে মহাকাশে একটি মহকাশযান পাঠিয়েছিল। “ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট” (ডার্ট) নামের মহাকাশযানটি প্রচণ্ড বেগে ছুটে গিয়ে ডিমরফোসে আঘাত করে। সেই আঘাতের ধাক্কায় ডিমরফোসে গর্ত সৃষ্টি হয়, ধূলো ছড়িয়ে পড়ে, দেখা দেয় আলোর ঝলকানি।
সেই থেকে একটি বিষয়ই নিশ্চিত করার অপেক্ষায় ছিল নাসা। তারা দেখতে চেয়েছিল দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা অনুযায়ী সত্যি গ্রহাণুকে তার কক্ষপথ থেকে সরানো সম্ভব হয়েছে কি-না। আর অবশেষে এই সাফল্যকে ধরেই মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি পৃথিবীকে বাঁচানোর উপায় পেয়ে গেছে বলে জানালো।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে নাসা প্রধান বিল নেলসন জানান, ১৬০ মিটার (৫২৫ ফুট) ব্যাসের গ্রহাণুকে কক্ষপথ থেকে অনেকখানি সরিয়ে দিয়েছে ডার্ট।
এই সাফল্যকে “অভূতপূর্ব” হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “মহাকাশ আমাদের দিকে যা-ই ছুঁড়ে দিক এখন আমরা তা থেকে নিজেদের বাঁচাতে প্রস্তুত।”
আগে কখনো কোনো গ্রহাণুকে এভাবে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়নি। ফলে নাসার এ সাফল্য মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে অনন্য। এ সাফল্য অবশ্য একদিনে আসেনি। সাত বছর আগে এই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা। ৩৩০ মিলিয়ন ডলারের সেই প্রকল্প অবশেষে গত ২৬ সেপ্টেম্বরের অভিযানে যুগান্তকারী সাফল্যের দেখা পেলো।
ডিমরফোস নামের গ্রহাণুটি আরেকটি বড় গ্রহাণুকে ১১ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে প্রদক্ষিণ করছিল। নাসার বিজ্ঞানীরা চেয়েছিলেন ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে প্রদক্ষিণের সময় ১০ মিনিট কমাতে।
নাসা প্রধান জানান, ১০ মিনিট নয়, সময় ৩২ মিনিট কমানো সম্ভব হয়েছে। ডার্ট ১১ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটের কক্ষপথকে কমিয়ে ১১ ঘণ্টা ২৩ মিনিটের করে দিয়েছে।
(সূত্র: ডয়চে ভেলে)