চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এই ইস্যুতে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই পারমাণবিক মহড়া চালানোর ঘোষণা দিয়েছে সামরিক জোট ন্যাটো। ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ নিজেই এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার সাথে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বার্ষিক নিয়মিত পারমাণবিক প্রতিরোধমূলক মহড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার ভূখণ্ড রক্ষার জন্য তার হাতে থাকা সমস্ত উপায় ব্যবহার করার বিষয়ে তামাশা করছেন না- এমন কথা জানানোর পরও ন্যাটো আগামী সপ্তাহে তাদের দীর্ঘ-পরিকল্পিত পারমাণবিক অনুশীলন শুরু করবে।
‘স্টেডফাস্ট নুন’ নামক এই মহড়াটি প্রতি বছর একবার করে অনুষ্ঠিত হয় এবং এটি সাধারণত প্রায় এক সপ্তাহ চলে। এতে পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম যুদ্ধবিমান উড়বে কিন্তু কোনো বোমা বিস্ফোরণ করা হবে না। এছাড়া প্রচলিত বিভিন্ন যুদ্ধবিমান, সার্ভেইলেন্স এবং রিফুয়েলিং বিমানও এতে নিয়মিত অংশ নেয়।
সামরিক জোট ন্যাটোর ৩০টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪টি দেশ এই মহড়ায় অংশ নেবে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার আগেই এই মহড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ন্যাটোর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মহড়ার মূল অংশটি রাশিয়া থেকে এক হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘এ মহড়ার মাধ্যমে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, আমাদের পরমাণু অস্ত্র নিরাপদ, সুরক্ষিত ও কার্যকর রয়েছে।’
ন্যাটোর এই মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমরা যদি একটি নিয়মিত ও দীর্ঘদিন আগের পরিকল্পিত এই মহড়া বাতিল করে দেই, তাহলে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কারণে অনেকের কাছে ভুল বার্তা যাবে।’
মূলত ইউক্রেনের ন্যাটো জোটে অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতেই রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরু করে। তবে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে না জড়ালেও কিয়েভকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধে যেকোনো ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন। তার হুমকিতে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের পরোক্ষ ইঙ্গিত রয়েছে বলেও মনে করা হয়।
অবশ্য সংগঠন হিসেবে সামরিক জোট ন্যাটোর কাছে কোনো অস্ত্র নেই। তবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী ৩টি সদস্য দেশ- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ ন্যাটোর ওপরে রয়েছে। জোটের গোপন নিউক্লিয়ার প্ল্যানিং গ্রুপ বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক করবে।