করোনা মহামারি গ্রাস করে ফেলেছিল গোটা বিশ্বকে। টানা প্রায় তিন বছর ধরে করোনার দাপুটে স্বভাব এখন স্তিমিত বলা চলে। তাই করোনার আগের অবস্থানে ফিরতে শুরু করেছে অর্থনীতির প্রায় প্রতিটি খাত। বিশ্বজুড়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পর্যটন খাতও। এখনো করোনার পূর্বের অবস্থানে পুরোপুরি না ফিরলেও বিশ্বব্যাপী পর্যটন বেড়েছে ৬০ শতাংশ। জাতিসংঘের পর্যটনবিষয়ক সংস্থা (ইউএনডব্লিউটিও) জানাচ্ছে এ তথ্য।
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত, গত ৭ মাসে আন্তর্জাতিক পর্যটক সংখ্যা ২০২১ সালের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ১৭২ শতাংশ। সব মিলিয়ে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২২ সালের প্রথমার্ধে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ আন্তর্জাতিক ভ্রমণে বের হয়েছিল।
২০২২ সালের জানুয়ারি-জুলাই মাসে প্রায় ৪৭ কোটি ৪০ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেছিলেন। যেখানে ২০২১ সালের একই মাসে ১৭ কোটি ৫০ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেন।
করোনা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করার কারণে এমনটি সম্ভব হয়েছে। ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮৬টির মতো দেশে কোভিড বিধিনিষেধ ছিল না। তবে ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পর্যটন খাত।
গত ৪ অক্টোবর জাতিসংঘ সতর্ক করে যে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব ‘মন্দার দ্বারপ্রান্তে’। জাতিসংঘের পর্যটনবিষয়ক সংস্থা (ইউএনডব্লিউটিও) বলছে, এখন সময় এসেছে পর্যটন নিয়ে পুনর্বিবেচনা করার।
পর্যটনে সবচেয়ে বেশি পুনরুদ্ধার ঘটেছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে। যেখানে ২০১৯ সালে পর্যটক আগমন ছিল ৭৪ ও ৭৬ শতাংশ।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বাকি বিশ্বের ওপর একটি বড় প্রভাব ফেলছে। উন্নত ও উদীয়মান উভয় অর্থনীতিকে টেনে ধরে রাখছে এই যুদ্ধ। জাতিসংঘের পর্যটনবিষয়ক সংস্থাটি বলছে, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ান ফেডারেশনের আগ্রাসনের ফলে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এটি একটি বড় নেতিবাচক ঝুঁকির প্রতিনিধিত্ব করছে। বড় বড় অর্থনৈতিক পরিবেশে বেড়েছে সুদের হার, জ্বালানির দাম বেড়েছে এবং বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম। বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০২২ সালের অবশিষ্ট সময় থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যটন পুনরুদ্ধারের জন্য বড় হুমকি এটি’।
বিশ্বজুড়ে পর্যটন খাত ঘুরে দাঁড়াতে আরো কিছুটা সময় লাগবে। তবে অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই খাতের টেকসই উন্নয়নে আরো বেশি মনোযোগী হওয়া দরকার বলছেন, বিশ্লেষকরা।
সূত্র: ডেইলি ট্র্যাভেল