যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়াতে এবার বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ছে কলেরা। কলেরা আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে দেশটিতে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘও বিষয়টি নিয়ে বলছে, উৎকণ্ঠাজনকভাবে কলেরা ছড়িয়ে পড়ছে সিরিয়াতে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বুধবার জানিয়েছে, গত ছয় সপ্তাহে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের মধ্যে কলেরা সংক্রমণের সন্দেহ করা হচ্ছে।
মারাত্মক এই রোগটি সাধারণত দূষিত খাদ্য বা পানি থেকে হয়। আক্রান্ত হওয়ার পর এটি ডায়রিয়া এবং বমি ঘটায়। সঠিক পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকলে এ রোগ আবাসিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।
গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে সিরিয়াতে। এতে দেশটির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পানি শোধনাগার, অর্ধেক পাম্পিং স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৯ সালেও একবার বড় আকারে কলেরা ছড়িয়ে পড়েছিল সিরিয়াতে।
এবারের প্রাদুর্ভাবের উৎস হিসেবে ইউফ্রেটিস নদীর পানিকে সন্দেহ করা হচ্ছে। কারণ এ নদীর পানি মারাত্মকভাবে দূষিত।
খরা, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং তুরস্কের তৈরি বাঁধের কারণে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় দূষণ সমস্যা আরও জটিল করেছে।
কলেরা আক্রান্ত হয়ে যদিও কেউ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা যেতে পারেন, কিন্তু পানিশূন্যতা ঠেকিয়ে ও বিশেষ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে এর চিকিৎসাও সম্ভব। কিন্তু বহু মানুষ ঠিক সময়ে চিকিৎসা পান না। এছাড়া বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করে প্রাদুর্ভাব রোধ করা যেতে পারে।
প্রতি বছরে কলেরা আক্রান্ত হয়ে ২১ হাজার থেকে ১ লাখ ৪৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
এদিকে পুরো বিশ্বেই কলেরা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বলে গত শুক্রবার সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসেই, ২৬টি দেশে কলেরার প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া গেছে; যেখানে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রতি বছর ২০টিরও কম দেশে কলেরার প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া যায়।