ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করা ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ক্রেমলিনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
দা গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুতিন তার ভাষণে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়ার গণভোটের ফলাফলে দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে এবং আপনারা জানেন ফলাফল কী? জনগণ তাদের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে এবং এটি একটি নির্ধারণী ঘোষণা।”
পুতিন আরও বলেন, “আমি নিশ্চিত যে ফেডারেল অ্যাসেম্বলি রাশিয়ান ফেডারেশনের চারটি নতুন অঞ্চলকে সংযুক্তকরণের বিষয়টি অনুমোদন করবে কারণ এটি লাখ লাখ মানুষের ইচ্ছা।”
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিতরা পুতিনের বক্তব্যকে বিপুল করতালিতে স্বাগত জানান।
পুতিন তার ভাষণে ইউক্রেনের প্রতি অবিলম্বে সমস্ত সামরিক পদক্ষেপ এবং যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যে যুদ্ধ তারা ২০১৪ সালে শুরু করেছিল সেই যুদ্ধ বন্ধে কিয়েভকে অবশ্যই আলোচনার টেবিলে ফিরে আসতে হবে। আমরা এর জন্য পথ খোলা রেখেছি এবং আমরা এটি বহুবার বলেছি।”
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া এবং খেরসনে অনুষ্ঠিত গণভোটের উল্লেখ করে পুতিন বলেন, “ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই জনগণের ইচ্ছার অভিব্যক্তিকে সম্মান করতে হবে।”
এ সময় তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের সমস্ত শক্তি ব্যবহার করে আমাদের ভূমি রক্ষা করব এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করা প্রয়োজন আমরা সবকিছুই করবো।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, “যে চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চল রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হলো তা সেখানকার লাখ লাখ মানুষেরই রায় এবং তারা রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে একই ইতিহাসের ধারা বহন করে।”
তবে পুতিন তার ভাষণে উল্লেখ করেন, “অতীতে ফিরে যাওয়া কিংবা সোভিয়েত ইউনিয়ন পুনর্গঠনের লক্ষ্য তার নেই।”
এদিকে, ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল সম্প্রতি গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার বিষয়ে রায় দেয়।
এসব অঞ্চলের নিরাপত্তার বিষয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, “রাশিয়া ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে যুক্ত করার অংশ হিসেবে এমন কিছু এলাকাকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করবে যা এখনো রাশিয়ার সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে আসেনি।”
এসব অঞ্চলের ওপর হামলা রাশিয়ার ওপর হামলা বলেই বিবেচিত হবে বলে জানান দিমিত্রি পেশকভ।
এছাড়া এসব অঞ্চলের সীমান্ত নির্ধারণের বিষয়ে দিমিত্রি পেশকভ জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের সীমান্ত যে অবস্থানে ছিল সেই সীমানাই এসব অঞ্চলের সীমান্ত বলে বিবেচিত হবে।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া এসব অঞ্চলের সীমান্ত নির্ধারণের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও দেশটি নির্ধারিত সীমান্ত পর্যন্ত এখনো নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে পারেনি। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ২০১৪ সালের সীমান্তকেই এসব অঞ্চলের সীমান্ত বলে গ্রহণ করবে। তবে জাপোরিঝিয়া এবং খেরসনের সীমান্তের ব্যাপারে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি মস্কো।