উরান
আমি একটা স্বপ্ন দেখে চমকে উঠলাম
কিছু বিদেশি মানুষ
আমার দেশের সমস্ত মাটি
কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে
কোটি কোটি মাটি কাটা গাড়ি
কোটি কোটি লরি…
পুরো দেশ পুকুর
জল থৈ থৈ
যারা সাঁতার জানে তারা সাঁতার কাটছে
যারা জানেনা ডুবে মরছে
আমি সাঁতার জানিনা
আমি ডুবে মরছি…
আমার দেশের কিছু মানুষ নৌকা চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে
হাততালি দিচ্ছে আর হাসছে…
কী সুন্দর তারা দেশের মাটি উরান দিয়েছে!
আমার চোখের জল তাদের মৃত্যুতে শুকায় না
সব মানুষের মৃত্যুতে আমার চোখে জল আসেনা
ব্যথা পাইনা
হৃদয় ভাঙেনা
এমনকি মৃত্যুর খবর পেয়েও দেখতে যাইনা
সৎকারে হাজির থাকিনা
ওরা কোটিপতি, ওরা পুঁজিপতি;
ওরা চিরকাল আমাদের…
যারা খেটে খাওয়া মানুষ
না খাটলে খেতে পায়না
বউ বাচ্চা শুকিয়ে থাকে
আমার চোখের জল তাদের মৃত্যুতে শুকায় না
বেমানান
কাগজ বেচবেন, কাগজ!
পুরাতন খাতা, পুরাতন বই,
খবরের কাগজ!
হাঁক শুনে বেরিয়ে এলেন এক বৃদ্ধ;
পরনে লুঙ্গি, উদোম গায়—
আমি কাগজ বেচব;
দীর্ঘ পঞ্চান্ন বছর ধরে লেখা
খাতার পাতা;
সাহিত্যের সমস্ত ডালপালা আমি ওর মধ্যে…
আমার ভালোবাসার জিনিস।
কোনও লেখকের থেকে চুরি করা নয়;
আমার হৃদয়ের সমস্ত আবেগ থেকে সৃষ্টি;
আলমারিতে যত্ন করে রাখা রয়েছে
কোনদিন ধুলোবালি পড়তে দিইনি।
বেচে দিয়ে একটু বিষ…
আমি ও কাগজগুলো ভীষণ বেমানান!
এবার বোঝ
রবি,
তুই আমার একমাত্র প্রিয় বন্ধু;
মনের যত কথা তোর সামনে খুলে বলা যায়
কোন ব্যাকরণ লাগেনা—
পৃথিবীর সব জায়গায় তোর সাথে হাঁটা যায়
কোন ভয় লাগেনা—
এবার বোঝ, কেন তুই আমার একমাত্র প্রিয় বন্ধু!
প্রস্তাব
তুমি নয় কে নয় বলো, আমিও নয়ই বলি;
তুমি হ্যাঁ কে না বলোনা, আমিও বলি না;
তুমি ঘাসকে ঘাস আর সবুজকে সবুজ বলো
আকাশকে আকাশ আর বাতাসকে বাতাস বলো
মাঠকে মাঠ আর নদীকে নদী, আমিও বলি;
তুমি আকাশে চাঁদ দেখো, সূর্য দেখো
গাছে ফুল, ফল, পাতা,
ফুলে মৌমাছি, মৌচাকে মধুপ,
নদীতে ঢেউ, কূলে নৌকা, আমিও দেখি;
তোমার চোখে যা সুন্দর, আমার চোখেও;
তুমি যেটা পছন্দ করোনা, আমারও পছন্দ নয়;
তুমি যা দেখো আমিও দেখি;
তুমি যা দেখো না আমিও দেখি না;
সুতরাং তুমি আমি এক সাথে থাকতেই পারি, পারিনা!
নিস্তব্ধ গোরস্থানে
আমার কোন জায়গা জমি নেই
পরের ভিটায় বাস
যেখানে আমার পূর্বপুরুষেরা শুয়ে আছে
জাগবে না কোনদিন
নিস্তব্ধ সেই গোরস্থানে
একটু খানি জায়গা কিনব
অনন্তকাল করব বাস।