রোহিঙ্গা নেতা নিহত মুহিবুল্লার মাসহ ১৪ স্বজন ট্রানজিট ক্যাম্প ত্যাগ করেছেন। তাদের কানাডা যাওয়ার কথা রয়েছে।
একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট পয়েন্ট থেকে তাদের ঢাকার উদ্দেশে পাঠানো হয়।
এর আগে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লার পরিবারের ১১ জন গত ১ এপ্রিল রাতে কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে এপিবিএন-৮ এর সহকারী পুলিশ সুপার (অপস) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের মাধ্যমে মুহিবুল্লার মা এবং দুই ভাইয়ের স্ত্রী-সন্তানসহ ১৪ জনকে উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্ট থেকে ঢাকার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয় গত রোববার দুপুরে। আমাদের আনুষ্ঠানিক কিছু জানানো হয়নি। যতটুকু জেনেছি সোমবার রাতেই তাদের কানাডা যাওয়ার কথা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের এক কর্মকর্তা জানান, মুহিবুল্লার মা-সহ তার দুই ভাইয়ের পরিবারের ১৪ জন সদস্য কানাডার উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করেছে। তাদের প্রক্রিয়া শেষে ঢাকার উদ্দেশে নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে কানাডায় রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে।
কানাডাগামী মুহিবুল্লার স্বজনরা হলেন— নিহত মুহিবুল্লার মা উম্মা ফজল (৬০) এবং ছোট ভাই হাবিবুল্লাহর স্ত্রী আসমা বিবি (৩৫), সন্তান কয়কবা (১৫), বয়সারা (১৩), হুনাইসা (৯), মো. আইমন (৮), ওরদা বিবি (৫), মো. আশরাফ (৫) ও আরেক ভাই আহম্মদ উল্লাহর স্ত্রী শামছুন নাহার (৩৭), সন্তান হামদাল্লাহ (১১), হান্নানা বিবি (৯), আফসার উদ্দীন (৭), সোহানা বিবি (৫) ও মেজবাহ উল্লাহ (১)।
ক্যাম্প থেকে যাত্রাকালে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়, জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারে প্রতিনিধিসহ পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্টের রোহিঙ্গা মো. জিয়াবুল হক রোহিঙ্গা জানান, কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে মুহিবের দুই ভাইয়ের পরিবারের ১৪ জন সদস্যকে কানাডা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ক্যাম্প থেকে ঢাকা নিয়ে গেছে। এসময় পুলিশসহ জাতিসংঘের সংস্থার লোকজনও ছিল।
ক্যাম্পের এআরএসপিএইচ-এর রোহিঙ্গা নেতা ইয়াছিন জানান, মুহিবুল্লার মা-সহ দুই ভাইয়ের পরিবারকে ক্যাম্প থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদেরও মুহিবুল্লার পরিবারের মতো কানাডায় নিয়ে যাচ্ছে বলে শুনেছি।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর মুহিবুল্লা খুন হওয়ার পর নিরাপত্তা বিবেচনায় তার পরিবারকে ১৩ অক্টোবর এবং পরদিন তার সংগঠনের আরও ১০ নেতার পরিবারকে ক্যাম্প থেকে নিরাপদ স্থান সরিয়ে নেয় কক্সবাজারের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। এরপর একই প্রক্রিয়ায় মুহিবুল্লার মৃত্যুর ছয় মাস পর তার পরিবারের ৯ জন সদস্যকে কানাডা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেও শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার ও শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এর কোনো বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।