ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মাহসার মৃত্যুর ঘটনায় দেশটিতে চলমান বিক্ষোভের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তব্যের সময় এ বিক্ষোভের প্রতি তার একাত্মতার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। যদিও একই সঙ্গে তিনি ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষেও মত দিয়েছেন।
সাধারণ পরিষদে দেয়া বক্তব্যে বাইডেন বলেন, ‘আজ আমরা সাহসী নাগরিক ও ইরানের সাহসী নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। যারা এই মুহূর্তে তাদের মৌলিক অধিকারগুলো সুরক্ষিত করার জন্য বিক্ষোভ করছে।’
কুর্দি নারী মাহসা আমিনিকে ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের নৈতিকতা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা মাহসাকে একটি মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সঠিকভাবে হিজাব করেননি।
পুলিশ হেফাজতে থাকার সময়েই মাহসার হার্ট অ্যাটাক হয়, এরপর তিনি কোমায় চলে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। পুলিশ মাহসাকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরিবারের অভিযোগ গ্রেপ্তারের পর তাকে পেটানো হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, কিছু নারী বিক্ষোভকারী তাদের হিজাব খুলে ফেলেছে এবং আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। অনেকে প্রতীকীভাবে তাদের চুল কেটেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী বাহিনীর (আইআরজিসি) আধা সামরিক বাহিনী বাসিজের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভের কারণে দেশটির শহরগুলোতে, বিশেষ করে উত্তর ইরানে বুধবার টানা পঞ্চম রাতে সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হয়েছিল।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ১৫টি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে। পুলিশের যানবাহন ও আবর্জনার বিনে আগুন দিয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’ এবং ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে যে তারা আটজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। মারা যাওয়াদের মধ্যে ছয়জন পুরুষ, একজন নারী ও এক শিশু। নিহতদের মধ্যে চারজনকে নিরাপত্তা বাহিনী খুব কাছ থেকে গুলি করেছে।