রাতভর প্রবল বৃষ্টি ও এর জেরে সৃষ্ট বন্যায় ইতালিতে ১০ জন মারা গেছেন। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও তিনজন। ইতালির মধ্যাঞ্চলীয় মার্চে এলাকায় রাতভর প্রবল বৃষ্টি ও বন্যায় এই ঘটনা ঘটে।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। ইতালীয় কর্তৃপক্ষ শুক্রবার জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা এখনও নিখোঁজ তিনজনের সন্ধান অব্যাহত রেখেছে।
রয়টার্সের প্রকাশিত ফুটেজে মার্চের পার্শ্ববর্তী উমব্রিয়া অঞ্চলের নিকটবর্তী কান্তিয়ানো গ্রামের বাসিন্দাদের রাস্তা থেকে কাদা পরিষ্কার করতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দা লুসিয়ানা অ্যাগোস্টিনেলি রয়টার্সকে বলেন, ‘(বন্যায়) আমার ফলের দোকানটি উল্টে গেছে।’
ইতালির নাগরিক সুরক্ষা সংস্থা বলেছে, দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত এক বছরে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়ে থাকে এটি তার এক তৃতীয়াংশ। বন্যার কবলে পড়া সেরার সান্ত’অবন্দিওর মেয়র লুডোভিকো ক্যাভার্নি রাষ্ট্রীয় রেডিও আরএআই’কে বলেছেন, ‘এটি (বৃষ্টি ও বন্যা) ভূমিকম্পের মতো ছিল’।
জাতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান ফ্যাব্রিজিও কার্সিও ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করতে মার্চের রাজধানী অ্যাঙ্কোনায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করেছেন। ফায়ার ব্রিগেডের প্রকাশিত ফুটেজে উদ্ধারকারীদের সেনিগালিয়ার সমুদ্রতীরবর্তী শহরের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়। এছাড়া অন্যদের একটি আন্ডারপাস পরিষ্কার করার চেষ্টা করতে দেখা যায়।
ইতালিয়ান সোসাইটি অব এনভায়রনমেন্টাল জিওলজির (এসআইজিইএ) বিশেষজ্ঞ পাওলা পিনো ডি’অ্যাস্টোর রয়টার্সকে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই বন্যা হয়েছে এবং পূর্বাভাস দেওয়া সহজ ছিল না। তিনি বলেন, ‘এটি অপরিবর্তনীয় ঘটনা ছিল। হয়তো আমাদের ভবিষ্যত কেমন হবে তার স্বাদ আমরা এখনই পাচ্ছি।’
ইতালির ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, প্রায় ৩০০ দমকলকর্মী বর্তমানে দুর্গত এলাকায় কাজ করছে এবং বন্যা থেকে বাঁচতে রাতারাতি ছাদে ও গাছে উঠে যাওয়া বহু মানুষকে উদ্ধার করেছে।
মার্চের আঞ্চলিক সরকারের নাগরিক সুরক্ষার প্রধান স্টেফানো আগুজি বলেছেন, রাতভর হওয়া বৃষ্টিপাত পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক বেশি প্রবল ছিল। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির জন্য আমাদেরকে স্বাভাবিক সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কেউ এমন কিছু আশা করেনি।’