অনেক জল্পনা কল্পনার পর গতকাল ঘোষিত হয়েছে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দল। সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জায়গা হয়নি এই দলে। এর ফলে তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারই শেষ বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। তবে তিনি এখনই শেষ মনে করছেন না। জাতীয় দলে ফেরার লড়াই চালিয়ে যাবেন। আরও দুই বছর জাতীয় দলের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেলতে চান তিনি, জানাচ্ছে ক্রিকবাজ।
টি-টোয়েন্টির পুরোনো দিনকে পেছনে ফেলে নতুন করে শুরু করতে চাইছে বাংলাদেশ। সে কারণেই এশিয়া কাপের আগে দলে আনা হয়েছে একগাদা পরিবর্তন। এবার বিশ্বকাপের আগে দল ঘোষণায় সাবেক অধিনায়ককে বাদ দিয়ে নতুন একটা বার্তাই দিতে চেয়েছে বাংলাদেশ।
শেষ কিছু দিন ধরেই মাহমুদউল্লাহর টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল বেশ। নিজের ফর্মের কারণেই এই পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন তিনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে ছিলেন না। নুরুল হাসান সোহানের চোটে শেষ টি-টোয়েন্টির দলে ঢুকেছিলেন তিনি।
এরপর এশিয়া কাপের দলে ছিল তার নাম। মূলত তার অভিজ্ঞতার জন্যই তাকে আরও একটা সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন নির্বাচকরা। তবে এশিয়া কাপে তার পারফর্ম্যান্স ছিল আগের মতোই, মন্থর। ফলে এই বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগে আবারও তার জায়গা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
শেষমেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে বাদই দেওয়া হয় তাকে। এই কারণে তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শেষ এমনটাও ধরে নেওয়া হচ্ছে। বয়স ৩৬ চলছে তার, এই সময়ে এমন আলোচনা ওঠাটাই স্বাভাবিক।
সেটা বিসিবিও ভেবেছিল। মাহমুদউল্লাহকে নিউজিল্যান্ড সফরের দলে রেখে একটা বিদায়ী ম্যাচ খেলার সুযোগও দেওয়া হয়েছিল তাকে। বোর্ডের অভিমত, মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশ ক্রিকেটকে যা দিয়েছেন, তার ফলে মাঠ থেকে বিদায় নেওয়াটা তার প্রাপ্যই।
বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তেমনই, ‘যদি ওকে রিটায়ার্ড করতে হয় এবং আমরা যদি ওকে জায়গা না দিতে পারি তাহলে ওকে এই সুযোগ মিনিমাম রেসপেক্ট থেকেও তো দেয়া উচিত। কারণ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবদান খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বহু ম্যাচ জিতিয়েছে আমাদের। ইভেন মুশফিকও। মুশফিক অবসর নিয়েছে, আমাদের তো খারাপ লাগে। শেষ দিন পর্যন্ত বলে যাচ্ছি, মুশফিক আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান। একেকটা ফরম্যাটে একেক জনের জায়গা হয় না টিম কম্বিনেশনের কারণে সেটা ভিন্ন বিষয়।’
এর আগে মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণাটা দিয়েছিলেন ফেসবুকে, কোনো অনুষ্ঠান ছাড়াই। সেটা বোর্ড সভাপতি পাপনের যে ভালো লাগেনি, সেটাও গেল মঙ্গলবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন। সেটা যেন মাহমুদউল্লাহর সাথে না হয়, সে কারণেই একটা বিদায়ী ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল তাকে। তবে মাহমুদউল্লাহ সেটা মেনে নেননি।
ক্রিকবাজকে বিসিবির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘মাহমুদউল্লাহ এই বিষয়ে রাজি হয়নি। সে এখনই বিদায় নিতে চায় না। সে জানিয়েছে যে সে আরও দুই বছরের মতো খেলতে চায়। জাতীয় দলে তার জায়গা ফিরে পেতে চায়।’ টি-টোয়েন্টি দল থেকে এভাবে বাদ পড়াটা আশা করেননি মাহমুদউল্লাহ। সেটা পেছনে ফেলতেই আরও একবার জাতীয় দলে ফেরার আশা করছেন সাবেক এই অধিনায়ক।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশে বসবে বিপিএল। এই টুর্নামেন্ট সামনে রেখেই প্রস্তুতি নিতে হবে তাকে। তবে তার জাতীয় দলে ফেরার আশা বাস্তবে রূপ নেয় কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে।