ডিপথেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে রোহিঙ্গা শিশুরা, এ পর্যন্ত ৫৩ মৃত্যু

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

প্রাণঘাতী ডিপথেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে রোহিঙ্গা শিশুরা। চিকিৎসকরা বলছেন, এ রোগ অত্যন্ত ছোঁয়াচে। আক্রান্ত কোনও শিশুর সংস্পর্শে এলে দ্রুত অন্যদেরও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সর্দি-কাশি ও হাঁচি থেকে এটি ছড়ায়।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৭ সাল থেকে কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শিশুদের শরীরে ডিপথেরিয়া রোগ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে গত ছয় বছরে নমুনা পরীক্ষায় ৪০৯ জনের শরীরে ডিপথেরিয়া রোগ শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে চার জন ছিল বাংলাদেশি। বাকি ৪০৫ জন ছিল রোহিঙ্গা শিশু। শনাক্তদের মধ্যে ৫৩ জন মারা গেছে। তাদের বেশির ভাগের বয়স ৫ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে।

চলতি বছর আগস্ট পর্যন্ত আট মাসে ৩৭ জনের শরীরে ডিপথেরিয়া রোগ শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে ৪ জন বাংলাদেশি এবং ৩৩ জন রোহিঙ্গা শিশু। মারা গেছে একজন। ২০২১ সালে শনাক্ত ৩০ জনের মধ্যে মারা যায় একজন। ২০২০ সালে ১৯ জন শনাক্ত হয়। ২০১৯ সালে ৩১ জন শনাক্ত হয়। মারা যায় ৩ জন। ২০১৮ সালে ২২৬ জন শনাক্ত হয়। মারা যায় ১৪ জন। ২০১৭ সালে ৬৬ জন শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে ৩০ জন মারা যায়।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রোগ নিয়ন্ত্রক ডা. ফাহিম আহমেদ ফয়সাল বলেন, ‘কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিশুরা প্রতি বছরই ডিপথেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের দেশের শিশুদের জন্মের ১৪-১৫ মাসের মধ্যে যেসব টিকা দেওয়া হয় তার মধ্যে ডিপথেরিয়া রোগের টিকাও রয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশে এ রোগ নেই। তবে রোহিঙ্গা শিশুরা মিয়ানমারে ঠিকমতো টিকা পায়নি। এ কারণে বাংলাদেশে আসার পর থেকে তাদের শরীরে এ রোগ ধরা পড়ছে। গত আট মাসে যে ৩৭ জন শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে চার বাংলাদেশি শিশুও রয়েছে।’

- বিজ্ঞাপন -

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘অত্যন্ত ভয়ংকর একটি রোগের নাম ডিপথেরিয়া। গত দেড় বছরে ৯ রোহিঙ্গা শিশু এ রোগের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছে। এসব শিশুকে টেকনাফ থেকে এ হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে দুই শিশু মারা গেলেও বাকিরা সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন। ভর্তি হওয়া ৯ শিশুর বয়স ছিল ৫ থেকে ৯ বছরের মধ্যে।’

তিনি জানান, এ রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে– জ্বর, গলাব্যথা, কাশি এবং জটিল পর্যায়ে গেলে মারাত্মক শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এ রোগ শ্বাসনালিকে ব্লক করে দেয়। এ কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।

কেন রোহিঙ্গা শিশুরা ডিপথেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমাদের দেশের শিশুকে জন্মের পর থেকে সরকারিভাবে যে দশটি রোগের টিকা দেওয়া হয় তার মধ্যে ডিপথেরিয়ার টিকা রয়েছে। এ কারণে আমাদের দেশের শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হয় না। তবে রোহিঙ্গা শিশুরা মিয়ানমারে এ টিকা পাননি। তাদের শিশুরা টিকার আওতার বাইরে থাকায় এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ রোগ মারাত্মক ছোঁয়াচে। আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে অন্য শিশু গেলে তারও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।’

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!