সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট শেয়ার করার অভিযোগে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাশকে আবারও হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের একটি দল তাকে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম।
তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ঝুমন তার ফেসবুক প্রোফাইলে ধর্ম অবমাননা করে একটি পোস্ট শেয়ার করার কথা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার রাতে সহকারী পুলিশ সুপার আবু সুফিয়ান জানান,সিরাজগঞ্জের একটি মন্দিরের সামনে মসজিদের দানবাক্স রাখার বিষয়ে কয়েকদিন আগে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন ঝুমন।
আবু সুফিয়ান বলেন, “তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।”
পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে এবং এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলে সে আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
তবে ঝুমন দাশ সাংবাদিকদের বলেন, তিনি এ ধরনের কোনো পোস্ট দিয়েছেন কি না তা মনে করতে পারছেন না। এখন বিশেষজ্ঞদের ছাড়া এটি নিশ্চিত হওয়া যাবে না কারণ তিনি তার ফেসবুক ওয়াল থেকে সেই মুছে ফেলা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুক পোস্টের জেরে ওই এলাকায় দুই দিন ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে যাতে আর কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
এদিকে, ঝুমনের স্ত্রী সুইটি দাশের দাবি, ঝুমন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কোনো অবমাননাকর পোস্ট শেয়ার করেননি। পুলিশ তাকে হয়রানি করার জন্য আবার তুলে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন সুইটি দাশ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে শানে রিসালাত নামে এক সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম। সেখানে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ঝুমন দাশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত পোস্ট দেন বলে অভিযোগ ওঠে। পোস্টটি আপত্তিকর জানিয়ে পরদিন এর প্রতিবাদে সমাবেশ করে হেফাজত।
ওই ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরে ১৬ মার্চ রাতে ঝুমন দাশকে আটক করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল করিম বাদী হয়ে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান ঝুমন দাশ।