শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ১৮১২ সালের ১১ মার্চ অবিভক্ত ভারতবর্ষের গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার অন্তগর্ত ওড়াকান্দির পার্শ্ববর্তী সাফলাডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম যশোমন্ত বৈরাগী ও মাতার নাম অর্ন্নপূর্ণা বৈরাগী। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সেভাবে হয়নি কিন্তু স্বশিক্ষিত হওয়ায় প্রেমভক্তির কথা সহজ- সরল ভাষায় স্বাবলীলভাবে প্রচার করতে পারতেন।বৈষ্ণব বাড়িতে জন্ম হওয়ায় শাস্ত্র আলোচনার মাধ্যমে হিন্দু ও বৌদ্ধ শাস্ত্র সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান লাভ করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় বিচরণ করার ফলে অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান লাভ করে প্রচলিত সাধন পদ্ধতির বাইরে গিয়ে ভিন্ন ধারার পদ্ধতিকে ঈশ্বরের আরাধনা জন্য বেছে নিয়ে ছিলেন। তাঁর এই সাধন পদ্ধতির নাম মতুয়াবাদ।
হরিচাঁদ ঠাকুরের মৃত্যুর পরে তাঁর ছেলে গুরুচাঁদ ঠাকুর মতুয়া ধর্মের উন্নতি সাধন, শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে ব্রতী হয়েছিলেন এবং এই শিক্ষার প্রসারটা করেছিলেন অন্ত্যজ শ্রেণী বা নিম্নবর্ণের হিন্দুদের ভিতর। যার ফলে হিন্দুদের একটি বিরাট অংশ মূলস্রোতধারার সাথে অগ্রসর হতে সম্ভবপর হয়েছে।
এই মহামানবের জন্মতিথি চৈত্র মাসের মধুকষ্ঞা ত্রয়োদশী তিথীতে। তাঁর এই জন্মতিথিতে ঠাকুর বাড়িতে মহাবারুনী স্নান ও মতুয়া মেলা হয়।
গতবছর করোনার কারণে বারুনীস্নান ও মেলা সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। এ বছর আবার করোনা মহামারীর দ্বিতীয় সুনামি শুরু হওয়ায় ও দূরপাল্লার গাড়িঘোড়া বন্ধ থাকায় ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভক্তরা আসতে না পারলে গোপালগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে মতুয়া ভক্তরা এসে স্বল্প পরিসরে শুধু পূজাঅর্চনা ও বারুনীর পূর্ণস্নানে অংশ গ্রহন করেছেন।
করোনার এই মহামারী থেকে সারা বিশ্বের মানব জাতিকে রক্ষার জন্য ও দেশ এবং জাতির কল্যাণে ভক্তরা সমন্নিতপ্রার্থনায় অংশ গ্রহন করেন।