উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার পড়ে পাঁচজনের মৃত্যু ও দুজন আহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ক্রেনচালকসহ ১০ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছ। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহাবুব আহমেদ এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন—ক্রেনচালক মো. আল আমিন, চালকের সহকারী রাকিব হোসেন, প্রকল্পে ভারী যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইফসকনের মালিক মো. ইফতেখার হোসেন, হেড অব অপারেশন মো. আজহারুল ইসলাম মিঠু, প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বে থাকা ফোর ব্রাদার্স গার্ড সার্ভিসের ট্রাফিকম্যান আফরোজ ও রুবেল, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসির সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলী, প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং হেভি ইকুইপমেন্ট সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা সিজিজিসির প্রকিউরমেন্ট অফিসার মঞ্জুরুল ইসলাম, ক্রেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিল্ড ট্রেড কোম্পানির ব্যবস্থাপক তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তুষার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন মৃধা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা (পশ্চিম) থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন গাজী তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে আবেদন করেন।
এই তিন আসামি হলেন—ক্রেনচালক আল আমিন, সহকারী রাকিব হোসেন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসির সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলী। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বাকি সাত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত প্রত্যেককে দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত বুধবার এই ১০ জনকে ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটে পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রসঙ্গত, সোমবার দক্ষিণ খানে বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে আশুলিয়া যাওয়া পথে উত্তরার জসীমউদদীনে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে পৌঁছালে বিআরটি প্রকল্পের একটি ক্রেন থেকে গার্ডার প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। এতে ৫ জন নিহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রকল্পের কাজ চলাকালীন একটি গার্ডার ক্রেন দিয়ে তোলা হচ্ছিল। হঠাৎ ক্রেনটি গার্ডারসহ কাত হয়ে যায় এবং নিচ দিয়ে যাওয়া একটি প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
প্রাইভেটকারে আরোহী ছিলেন সাতজন। ছিলেন নববিবাহিত হৃদয়ের বাবা রুবেল (৬০), হৃদয়ের শাশুড়ি ফাহিমা (৪০), কনে রিয়া মনির খালা ঝর্ণা (২৮), ঝর্ণার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। শুধু বেঁচে আছেন হৃদয় ও রিয়া।