মধ্য ও দক্ষিণ ইউরোপের তিন দেশ অস্ট্রিয়া, ইতালি ও ফ্রান্সের কর্সিকা দ্বীপে প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিন জন শিশুও রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও কয়েক ডজন মনুষ।
বৃহস্পতিবার এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে। নিহতদের অধিকাংশই মারা গেছেন ঝড়ে উপড়ানো গাছের তলায় চাপা পড়ে।
ফ্রান্সের কর্সিকা দ্বীপেই মারা গেছেন ৬জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ঝড়ো আবহাওয়া শান্ত হওয়ার পর সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে কর্সিকা দ্বীপে গিয়েছিলেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরাল্ড ডারমানিন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, নিহতদের মধ্যে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরী এবং এক যুবক মারা গেছেন ঝড়ে উপড়ে যাওয়া গাছের নিচে চাপা পড়ে। আর একজন বয়স্ক নারীর গাড়ির ছাদে আছড়ে পড়ে সাগরতীরে পর্যটকদের জন্য তৈরি একটি ছাউনির ছাদ। তাতেই মারা পড়েন তিনি।
ফ্রান্সের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে ঝড়ের সময় কর্সিকার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ২২৪ কিলোমিটার গতিতে বয়ে গেছে দমকা হাওয়া। বিপুল শক্তিতে বাতাস বয়ে যাওয়ায় দ্বীপটির বহু জায়গায় গাছ উপড়ে গেছে, বিপুলসংখ্যক ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউরোপের অধিকাংশ অঞ্চলে গত দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলেছে মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ। তারপরই এলো এই দুর্যোগ। প্রত্যক্ষদর্শীলা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারের ঝড় ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত এবং আবহাওয়া দপ্তর থেকে কোনো প্রকার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি।
কর্সিকা দ্বীপের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী কেড্রিক বয়েল বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম সাধারণ মৌসুমি ঝড়। কিন্তু পরে বুঝলাম— এটা কোনো সাধারণ ঝড় নয়। এত ধ্বংসাত্মক ঝড় আমরা এর আগে দেখিনি।’
ঝড়ে অস্ট্রেলিয়ায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। সব মৃত্যুই ঘটেছে গাছের তলায় চাপা পড়ে।
এছাড়া ইতালিতে ২ জন নিহত হয়েছেন, তাদেরও মৃত্যুর কারণ একই।
ইতালির সরকারি সূত্রে জানা গেছে, দেশটির ভেনিস, টুসকানি ও লিগুরিয়ায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশি। ভেনিসের বিভিন্ন খোলামেলা রেস্তোরাঁর ছাউনি উড়ে গেছে। টুসকানি ও লিগুরিয়ায় অনেক বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।