এক
বাসটি ছিলো দিনের শেষ বাস। কিছু দূর যেতেই সাইন্স ফ্যাকাল্টির সামনে থেকে হঠাৎ একটা মেয়ে বাস থামিয়ে উঠে পড়ে। শাড়ি পরিহিতা। কিছুক্ষণ পর আমার পাশে এসে দাঁড়ায়। আমারও সৌভাগ্য হয়নি সিটে বসার, তার উপর হাতে দুটি ব্যাগ, কাঁধে একটা। তাই কিছুই করার নেই আমাদের সাথে তাকেও দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
হয়তো কোন ভাইবা ছিলো কিংবা কোন কিছু সেলিব্রেট করার জন্য শাড়ি পড়ে এসেছিলো। মজার ব্যাপার হলো ক্যাম্পাসে কোনদিন এমন করে কোন মেয়েকে দেখেনি। যেমন করে মেয়েটিকে আজ চোরের মত দেখছিলাম। সত্যি কথা বলতে কি অদ্ভুদ সুন্দর লাগছিলো মেয়েটিকে!
ও, আমি রিমেল।মাস্টার্স শেষ হলো কয়েকদিন হলো। আজ আসছি হলের রুমে কিছু কাগজ-পত্র ছিলো সেই গুলো নিতে।
এবার মেয়েটির দিকে চোখ পড়তেই কেমন যেন বিব্রত মনে হলো তাকে। হয়তো মেয়েটি বুঝতে পেরেছে আমি ওর দিকে তাকাচ্ছি। কিন্তু আমি তো বুঝতে না পারার মতই ওর দিকে তাকাচ্ছি। কিছুক্ষণ পর বুঝলাম মেয়েটি তার শাড়ির আঁচল নিয়ে বিব্রত। বারবার শাড়ির আঁচলটি কাঁধ থেকে পড়ে যাচ্ছে। আমি আর এই সুযোগটি মিস করতে দেরি করিনি। ব্যাগ থেকে কয়েকটা সেফটিপিন বের করে, অন্যদের অলক্ষ্যে ব্যাগের উপর গেঁথে মেয়েটিকে বললাম, আপনি কিছু মনে না করলে, ব্যাগটা কিছুক্ষণের জন্য ধরবেন?
মেয়েটি বিরক্ত নিয়ে আমার দিকে তাকালো।
সাবধানে ধরবেন। উপরে কিছু….
মুহূর্তের মধ্যে বিরক্ত যেন উবে গেল।
থ্যাংকস!
ওয়েলকাম। ব্যাগটা এখন নিতে পারি?
শিওর।
শ্যামলি আসতেই আমি নেমে পড়লাম। মেয়েটি হয়তো আরো কিছু দূর যাবে।
ও আচ্ছা বলে রাখি, সেফটিপিনসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস আমার ব্যাগে সবসময় থাকে। আর্ট ডিরেকক্টর বলে কথা। পড়াশোনার ফাঁকে বিজ্ঞাপন, নাটকে আর্ট ডিরেকশ্ন দিয়ে বেড়াতাম।ভাবছি, পড়ালেখা তো শেষ এবার সিনেমায় কাজ করবো।
দুই
এখন আমি পুরোদস্তুর একজন আর্ট ডিরেক্টর। একদিন কাজের প্রয়োজনে আজিজে যায়। কাজ শেষ করে বের হতেই একটা কণ্ঠস্বরে পিছনে ফিরে তাকাই….
এক্সকিউজ মি..
আপনি রিমেল না !
হা।
আমি লগ্ন।
চিনতে পারছেন আমায়?
আচ্ছা, এই সেফটিপিনটি চিনতে পারছেন?
ও আচ্ছা, আপনি !
সরি! অনেকদিন হলো তো..
স্মৃতি ঠিক কাজ করছিলো না। তাছাড়া আপনি সেইদিন শাড়ি পড়েছিলেন….
আচ্ছা কিছু মনে না করলে, একসাথে কফি হয়ে যাক।
শিওর, প্লিজ…