প্রথমে “টার্গেট” করা হয় পর্যটকদের। এরপর মাদক আর নারী দিয়ে তাদের ফেলা হয় ফাঁদে। কৌশল হিসেবে গোপন ক্যামেরায় নারী এবং মাদকসহ তোলা হয় একাধিক ছবি। পরে ভুক্তভোগী পর্যটকদের কাছ থেকে দাবি করা হয় বড় অংকের টাকা। টাকা দিতে রাজি না হলেই নারী ও মাদকের সঙ্গে তোলা ছবি ফাঁস করে দেওয়া হুমকি দেয় চক্রগুলো।
এসব কথা স্বীকার করেছে চার পর্যটককে ব্ল্যাকমেইল করে বন্দির ঘটনায় অভিযুক্ত দুই আসামি। ১৩ আগস্ট ট্যুরিস্ট পুলিশের হাতে আটক হওয়া দুই আসামি পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা স্বীকার করেন।
এমন তথ্য দিয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, ৭ আগস্ট কক্সবাজার পর্যটন জোনে শিউলি কটেজ নামের একটি কথিত হোটেলে চার পর্যটককে অপহরণ করে টাকা আদায়ের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের নামে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হামিদ মামলাটি তদন্ত কাজ পরিচালনা করছে।
তদন্তে সেদিনের ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তার মধ্যে সরাসরি জড়িত দুই আসামিকে ১৩ আগস্ট রাতে ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি টিম গ্রেপ্তার করে।
তারা হলো- কক্সবাজারের ঈদগাঁও ইসলামপুর এলাকার রাশেদুল ইসলাম (২৫) ও মো. সাকিল (২২)। তাদের ১৩ আগস্ট রাত ১১ টার দিকে সুগন্ধা পয়েন্টের পাশ থেকে আটক করা হয়।
অভিযুক্তদের দেওয়া তথ্যের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া দুইজনের সঙ্গে এই চক্রে আরও ৮-১০ জন জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে তারা দালালের মাধ্যমে ট্যুরিস্টদের এই কটেজে এনে নারী ও মাদক দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল। তারা পর্যটকদের আপত্তিকর ছবি ধারণ করে রাখে এবং অভিযোগ দিলে সেই ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া ভয় দেখায়। ফলে ভুক্তভোগীরা কেউ অভিযোগ করে না।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ কাজে জড়িত একটি বড় দালাল সিন্ডিকেটের তথ্য দিয়েছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর ছত্রচ্ছায়ায় মূলত কয়েকটি কটেজে এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়ে আসছিল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পেলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলবে।