সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের আমির শায়খুল হাদিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এর প্রতিবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী আজ সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আজিজুল হক বলেন, শায়খুল হাদিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এদেশের তৌহিদি জনতার রাহবার ও আধ্যাত্মিক নেতা। তিনি এদেশের হাজার হাজার আলেমের সম্মানিত ওস্তাদ। তাকে হয়রানি কিংবা তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করা হলে এদেশের লক্ষ লক্ষ তৌহিদি জনতা তা প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, হেফাজত কোনো তাণ্ডব চালায়নি; বরং ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীদের দিয়ে গুপ্ত হামলার তাণ্ডব চালিয়ে রাজনৈতিকভাবে এখন হেফাজতকে দোষারোপ করা হচ্ছে। হাসানুল হক ইনুসহ সরকারদলীয় ব্যক্তিবর্গ তদন্ত ছাড়াই হেফাজতের নামে অনবরত মিথ্যাচারপূর্বক হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা কোনো ধরনের রক্তচক্ষুকে পরোয়া করি না। আমরা কোনো সংঘাত চাই না, কিন্তু আমাদের উসকানি দিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে এর পরিণতি সরকারের জন্য ভালো হবে না।
তিনি আরো বলেন, হাসানুল হক ইনু পুলিশের গুলিতে শহিদ হওয়া ২১টি প্রাণের জন্য একটুও দুঃখপ্রকাশ করেননি! পুলিশ কর্তৃক সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের বিচার চাননি! শান্তিপূর্ণ হরতাল ও বিক্ষোভ মিছিলে কারা গুলি চালিয়ে পরিস্থিতিকে সহিংস করে তুলেছিল? হেলমেট পরে চাপাতি ও রামদা হাতে কারা পুলিশের সহযোগী হিসেবে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারী মুসল্লিদের ওপর হামলে পড়েছিল? সেসবের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখেছে সারা দেশের মানুষ। ২১ জন নিরীহ প্রতিবাদকারী নাগরিককে যারা শহিদ করেছে, তারাসহ ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীদের একদিন বিচার করা হবে ইনশাআল্লাহ।
আজিজুল হক বলেন, এতগুলো সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, নিশ্চয়ই সেখানকার সিসি ক্যামেরাগুলোতে হামলার ভিডিও ফুটেজ থাকার কথা। সেগুলো তদন্ত করলেই প্রকৃত তাণ্ডবকারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব। কিন্তু কেন হামলাকালীন কোনো ভিডিও ফুটেজ বা ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে না এখনো? কোনো তদন্ত ও প্রমাণ ছাড়াই আগেভাগে হেফাজতে ইসলামকে দায়ী করে অনবরত প্রোপাগান্ডা চালানো থেকেই বুঝা যায়, স্যাবোট্যাজ হিসেবে এসব তাণ্ডব ঘটিয়ে হেফাজতকে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। বিরোধী পক্ষের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এহেন স্যাবোটাজ ঘটাতে আমরা আগেও বহুবার দেখেছি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, হাসানুল হক ইনু জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি। অথচ তিনি দলীয় আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে দীর্ঘসময় একটি বুর্জোয়া পুঁজিবাদী ফ্যাসিস্ট সরকারের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। সংবাদমাধ্যমে আমরা জেনেছি, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী থাকাকালীন তিনি অঢেল অর্থসম্পদ বানিয়েছেন। এটাই কি সমাজতান্ত্রিক আদর্শের নমুনা! এছাড়া বঙ্গবন্ধু-হত্যার পর ট্যাংকের ওপর শার্ট খুলে যিনি নেচে নেচে উল্লাস করেছিলেন, আজকে তার মুখে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বেমানান। এদেশে ভারতের স্বার্থরক্ষায় দালালির পুরস্কার স্বরূপ তিনি আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী হতে পেরেছিলেন।